Рет қаралды 34,040
গবাদিপশু বিশেষ করে গরুর খাদ্য হিসেবে আমাদের দেশে শুকনা খড়ের ব্যবহার ব্যাপক। কিন্তু এতে প্রয়োজনীয় পরিমাণে আমিষ, শর্করা বা খনিজ উপাদান থাকে না। এদিকে খাবারের দামও ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। রোগ-ব্যাধির প্রকোপও কম নয়। তাই লাভজনকভাবে গবাদিপশু পালন করা আজকাল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে সহায়তা করবে ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র।
ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র কেনআমিষের উৎস হিসেবে ইউরিয়া, শর্করা ও খনিজের উৎস হিসেবে মোলাসেসের (চিটা গুড়) জুরি মেলা ভার! ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র গরু সাধারণত আগ্রহের সাথে খেয়ে থাকে। এতে ওজন ও উৎপাদন উভয়ই বৃদ্ধি পায়। সর্বোপরি এটি একটি লাভজনক ও সহজ প্রযুক্তি। এর কম খরচে বেশি মাংস বৃদ্ধির ক্ষমতাও অসাধারণ।
উপাদানঃ-
১ কেজি ইউরিয়া মোলাসেস তৈরির জন্য নিম্নোক্ত উপাদান জরুরি-
১. পানি- ৫০০-৬০০ মিলি । ২. চিটাগুড়- ২৫০ গ্রাম । ৩. ইউরিয়া- ৩ ০গ্রাম।
প্রস্তুত ঈাখঁ খড়, মোলাসেস ও ইউরিয়া মেপে নিতে হবে। এরপর পরিষ্কার পানির সঙ্গে এমনভাবে মেশাতে হবে যেন সম্পূর্ণ দ্রবণ খড়ের সঙ্গে সহজে মিশে যায়। পলিথিন বিছানো বা পাকা মেঝেতে শুকনো খড় সমভাবে বিছিয়ে রেখে তার ওপর ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবণ ধীরে ধীরে ঝরনা বা হাত দিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রয়োজনে খড়কে উল্টিয়ে দিতে হবে যাতে সমস্ত খড় দ্রবণ শুষে নিতে পারে। এভাবে স্তরে স্তরে খড় সাজিয়ে তাতে সমঅনুপাতে ইউরিয়া মোলাসেস দ্রবণ মিশিয়ে নিতে হবে।
খাবারের পরিমাণগরুকে তার ইচ্ছেমতো খেতে দেওয়া যাবে। তবে প্রথমদিকে অল্প অল্প করে দিয়ে অভ্যাস করে নিতে হবে। ইউরিয়ার পরিমাণ যেন বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ইউরিয়া বেশি হলে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। ইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র একবার তৈরি করে দু’তিন দিনও খাওয়ানো যায়। খাওয়ানোর পর পরই বেশি পরিমাণ পানি পান করতে দেওয়া উচিত নয়। বেশি দিনের জন্য তৈরি করলে ইউএমএস পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে, যাতে নষ্ট হয়ে না যায়।
প্রযোজ্যইউরিয়া মোলাসেস স্ট্র বাছুর, বাড়ন্ত গরু, দুগ্ধবতী বা গর্ভবতী গরু ও মহিষকেও অনায়াসে খাওয়ানো যায়। অন্য কোনো খাবার খুব একটা না দিলেও গরুর উৎপাদন ও ওজন বাড়তে থাকে।
ইউ এম এস খাওয়ানোর গবেষণালব্ধ ফলঃ
বিএলআরআই গবেষণায় দেখা গেছে বাড়ন্ত ষাঁড়কে (৩০০ কেজি) ইউ এম এস যথেচ্ছা পরিমাণ খাওয়ানোর সাথে দৈহিক ওজনের শতকরা ০.০৮০-১.০ ভাগ দানাদার মিশ্রণ সরবরাহ করলে দৈনিক ৭০০-৯০০ গ্রাম দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পায় |
অন্য গবেষণায় দেখা গেছে পাবনা অঞ্চলের গাভীকে শুকনো খরের পরিবর্তে ইউ এম এস খাওয়ালে গাভী প্রতি দৈনিক দানাদার খাদ্য ১.৫ কেজি কম দিয়েও দুধের উৎপাদন প্রায় ১.০ লিটার বৃদ্ধি পায় |
গবেষণায় দেখা গেছে যে এ পদ্ধতিতে খরের সঙ্গে ১.০০ টাকার মোলাসেস খাইয়ে প্রায় ৫.০০-৭.০০ মূল্যের গরুর মাংস উৎপাদন সম্বভ |
ইউ এম এস বাছুর, বাড়ন্ত, দুগ্ধবতী ও গর্ভবতী গরু অথবা মহিষকে চাহিদামতো খাওয়ানো যায় |
সকল বয়সের গরু ও মহিষ যথেচ্ছা পরিমান এই খাদ্য গ্রহণ করতে পারে |
কেন ইউ এম এস খাওয়ালে গরুর দুধ বা ওজন বৃদ্ধি পায়?
গরু রুমেনের চাহিদা মোতাবেক আস্তে আস্তে খরের সাথে ইউরিয়া থেকে নাইট্রোজেন মোলাসেস থেকে শর্ক্রা সরবরাহ পেয়ে থাকে | শুধু তাই নয়, মোলাসেস একইভাবে খনিজ পদার্থও পশুকে সবরাহ করে |
উক্ত খাদ্য প্রণালী গরুর রুমেনের পরিবেশ ঠিক রাখে ফলে খড় জাতীয় খাদ্যের পরিপাচ্যতা বৃদ্ধি পায় |
ইউ এম এস প্রযুক্তি ব্যবহারের খাদ্যসূত্রঃ
সূত্র নং ১-ইউ এম এস প্রযুক্তি ব্যবহারে গরু মোটাতাজাকরণে খাদ্য সূত্র
দৈনিক খাদ্যের পরিমাণ = ইউ এম এস (গরুর ইচ্ছামতো) + (দানাদার মিশ্রণ দৈহিক ওজনের শতকরা ০.০৮০-১.০ ভাগ) |
সূত্র নং ২-ইউ এম এস প্রযুক্তি ব্যবহারে দুগ্ধবতী গাভীর খাদ্য সূত্র
দৈনিক খাদ্যের পরিমাণ= ইউ এম এস (গাভীর ইচ্ছামতো) + দুধ উৎপাদনের ভিত্তিতে দানাদার মিশ্রণ |
সূত্র নং ২-ইউ এম এস প্রযুক্তি ব্যবহারে বাছুরের (৬ মাস) খাদ্য সূত্র
দৈনিক খাদ্যের পরিমাণ = ইউ এম এস (বাছুরের ইচ্ছামতো) + দানাদার মিশ্রণ (দৈহিক ওজনের শতকরা ১.০ ভাগ) |
বি দ্রঃ প্রযুক্তিটি সহজ, পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ামুক্ত ও লাভজনক এবং একই সাথে গবাদি পশু থেকে পরিবেশ দূষণ হ্রাশ করে |