Рет қаралды 1,499
@bhonkatta03
#explore
#travel
#amarnath
#amarnathyatra
অমরনাথ গুহা একটি হিন্দু তীর্থক্ষেত্র যা ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত। এটি একটি শৈব তীর্থ। এই গুহাটি সমতল থেকে ৩,৮৮৮ মিটার (১২,৭৫৬ ফুট) উঁচুতে অবস্থিত। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ১৪১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই তীর্থে যেতে পহেলগাঁও শহর অতিক্রম করতে হয়। এই তীর্থ ক্ষেত্রটি হিন্দুদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্যতম পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত হয়। গুহাটি পাহাড় ঘেরা আর এই পাহাড় গুলো সাদা তুষারে আবৃত থাকে বছরের অনেক মাস ধরে। এমনকি এই গুহার প্রবেশপথও বরফ ঢাকা থাকে। গ্রীষ্মকালে খুব স্বল্প সময়ের জন্য এই দ্বার প্রবেশের উপযোগী হয়। তখন লক্ষ লক্ষ তীর্থ যাত্রী অমরনাথের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। অমরনাথের গুহাতে চুইয়ে পড়া জল জমে শিবলিঙ্গের আকার ধারণ করে। জুন-জুলাই মাসে শ্রাবণী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। শেষ হয় জুলাই-আগস্ট মাসে গুরু পূর্ণিমার সময় ছড়ি মিছিলে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই অমরনাথ যাত্রায় যোগদান করেন।
গুহার ৪০ মিটার (১৩০ ফুট) ভিতরে গুহার ছাদ থেকে জল ফোঁটায় ফোঁটায় চুঁইয়ে পড়ে। এই চুঁইয়ে পড়া জলের ধারা খাড়া ভাবে গুহার মেঝেয় পড়ার সময় জমে গিয়ে শিব লিঙ্গের আকার ধারণ করে। কখনো কখনো ৮ ফুট উঁচুও হয় এই শিব লিঙ্গ। তবে গত কয়েকবছর ধরেই সময়ের আগেই বরফলিঙ্গ গলে যাচ্ছে যা হয়তো উষ্ণায়নের ফল। জুন-জুলাই মাসে শ্রাবণী পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় অমরনাথ যাত্রা। শেষ হয় জুলাই-আগস্ট মাসে গুরু পূর্ণিমার সময় ছড়ি মিছিলে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই অমরনাথ যাত্রায় যোগদান করেন। তীর্থ যাত্রার প্রধান উদ্দেশ্যই এই শিব লিঙ্গে পূজা দেওয়া।
অমরনাথ গুহার বয়স আনুমানিক বছর। পুরাণ অনুসারে, শিব পার্বতীকে অমরত্ব শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে অমরনাথ গুহাকে বেছে নিয়েছিলেন। পহেলগাঁও, যেখান থেকে অমরনাথ যাত্রা শুরু হয়, সেই স্থানে শিব তাঁর ষাঁড় নন্দীকে রেখে গিয়েছিলেন। চন্দনওয়াড়িতে তিনি তাঁর শিরস্থ চন্দ্রকে রেখে যান এবং শেষনাগে তিনি তাঁর দেহে বিচরণরত সর্পকুলকে রাখেন। গণেশকে লাভ করে। এদের নাকি আজও গুহার ভিতরে দেখা যায়।
অমরনাথ গুহাটি আবিষ্কার করেন বুটা মালিক নামে এক মুসলমান মেষপালক। তিনি এখানে এক সন্ন্যাসীর দেখা পান। সন্ন্যাসী তাঁকে একটা থলিতে কিছু কয়লা দান করেন। পরে সেই কয়লা সোনায় পরিণত হয়। বুটা সেই স্থানে ফিরে যান। কিন্তু সেই সন্ন্যাসীকে আর দেখতে পাননি। বদলে তিনি অমরনাথ লিঙ্গ দেখতে পান।
অমরনাথ তুষারলিঙ্গের বৃদ্ধি চন্দ্রকলার উপরে নির্ভরশীল। শিবলিঙ্গ ছাড়াও আরও দু'টি লিঙ্গ এই গুহায় রয়েছে। এদের পার্বতী ও গণেশ মনে করা হয়।
অমরনাথে কবে থেকে তীর্থ যাত্রা শুরু হয় তা জানা যায় না। একটি তথ্যসূত্র থেকে ধারণা করা হয় কিংবদন্তী রাজা আরজরাজা (খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ সাল) বরফ নির্মিত শিবলিঙ্গে পূজা দিতেন। ধারণা করা হয়, রাণী সূর্যমতি ১১ শতকে অমরনাথের এই ত্রিশূল, বাণলিঙ্গ ও অন্যান্য পবিত্র জিনিস উপহার দেন। এছাড়াও পুরাতন বিভিন্ন বই থেকে আরও বেশ কিছু ভিন্ন ভিন্ন এ সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়।
ধারণা করা হয় মধ্যযুগে অমরনাথের কথা মানুষে ভুলে গিয়েছিল কিন্তু ১৫ শতকে তা আবার আবিষ্কৃত হয়। প্রচলিত আছে কাশ্মীর একসময় জলে প্লাবিত হয়ে যায় এবং কাশ্যপ মুনি সে জল নদীর মাধ্যমে বের করে দেন। এরপর ভূগু মুনি অমরনাথ বা শিবের দেখা পান। এভাবে আবার অমরনাথের প্রচার শুরু হয়। বর্তমানে প্রতি বছর কয়েক লাখ মানুষ অমরনাথ যাত্রা করে।
অমরনাথ গুহার অন্য কাহিনি :
অন্য আরেকটি কিংবদন্তি অনুসারে, মহাদেব যখন দেবী পার্বতীকে অমৃত জ্ঞানের বর্ণনা করছিলেন, ঠিক সেইসময় গুহায় একটি শুক অর্থাৎ সবুজ গলার তোতাও উপস্থিত ছিল। সেও সেই বাণী বা সংলাপ শুনেছিল। কাহিনি শুনতে শুনতে একটা সময় ঘুমিয়ে পড়েন। এই অবস্থায় মহাদেব পার্বতীর পরিবর্তে ওই তোতা গুনগুন করতে থাকে। ভগবান শিব এ কথা জানার পর শুককে হত্যা করার জন্য দৌড়ে যান। কিন্তু দৌড়াবার সময় শিব তাঁর ত্রিশূলটি ভুলে ফেলে চলে যান।
মহাদেবের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে তিন জগতে ছুটে বেড়ায় শুক। শেষমেষ বেদব্যাসের আশ্রমে গিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখানে একেবারে ছোট্ট রূপ ধারণ করে ব্যাসের স্ত্রীর মুখে প্রবেশ করে। মুখের ভিতরে প্রবেশ করার পর ব্যাসের স্ত্রীর গর্ভে চলে যায় ওই ছোট্ট শুক। কিংবদন্তি অনুসারে, টানা ১২ বছর ধরে একই গর্ভে লুকিয়ে ছিল শুকপাখি। সেই সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এসে শুককে আশ্বস্ত করে বলেন যে, ‘তুমি বাইরে এলে তোমার ওপর মায়ার কোনও প্রভাব পড়বে না।’ এরপরে তিনি গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসেন। বেরিয়ে আসার পর তাঁকে ব্যাসের পুত্র নামে পরিচিত হয়। এও উল্লেখ রয়েছে, শুক গর্ভেই বেদ, উপনিষদ, দর্শন ও পুরাণ ইত্যাদিরও জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কঠোর তপস্যা করেন ও পরবর্তীকালে ‘শুকদেব মুনি’ নামে বিশ্বে প্রসিদ্ধ হন।