Рет қаралды 31,929
বাংলার লোকগাঁথায় আজও অম্লান বেহুলা-লক্ষিন্দর
বাসর ঘর। এটি একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসির স্থাপনা। এটি বগুড়া শহর থেকে ১০কিলোমিটার উত্তরে এবং মহাস্থান গড় থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণে গোকুল গ্রামে অবস্থিত। স্থানীয়ভাবে এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই অধিক পরিচিত। অনেকে এটাকে লক্ষ্মীন্দরের মেধ বলে থাকেন।
এই ঐতিহাসিক স্তম্ভটির উচ্চতা প্রায় ৪৫ ফুট। স্তম্ভের পূর্বার্ধে রয়েছে ২৪ কোণ বিশিষ্ট চৌবাচ্চা সদৃশ একটি কক্ষ। এখানে ১৭২টি চারকোণা কক্ষসহ একটি মঞ্চ পাওয়া যায়। ১৯৩৪-৩৬ সালে খননের ফলে এখানে একটি বিশাল মন্দিরের বা স্তূপের ভিত্তি উন্মোচিত হয়েছে। এ ভিত্তিটি স্তরে স্তরে উঁচু করে কুঠুরি নির্মাণ রীতিতে নির্মিত।
মনসামঙ্গল কাব্যের লোকগাঁথা:
লখিন্দরের বাবা চাঁদ সওদাগর ছিলেন হিন্দু দেবতা শিবের একনিষ্ঠ পূজারী। তাই তিনি অন্য কোন দেবতার আরাধনা করতেন না। অপরদিকে শিবের কন্যা মনসা ছিলেন সর্পদেবী। তার বাবা শিব তাকে বলেন, যদি কোন শিবের উপাসক প্রথম মনসার পূজা করেন তাহলেই মর্ত্যে তার পূজার প্রচলন সম্ভব।
তখন মনসা চাঁদ সওদাগরকে নির্বাচন করে তাকেই মনসা পূজার আয়োজনের অনুরোধ করে। কিন্তু চাঁদ সওদাগর মনসার প্রস্তাবে রাজি হননি। তখন রাগান্মিত হয়ে মনসা তাকে শাপ দেন- চাঁদ সওদাগরের প্রত্যেক ছেলে সাপের কামড়ে মারা যাবে। মনসার অভিশাপে এইভাবে একে একে লখিন্দর ব্যতীত চাঁদ সওদাগরের সকল পুত্রই সর্পদংশনে মারা যান। তাই লখিন্দরের বিয়ের সময় তার বাবা এমন বাসর ঘর তৈরি করেন যা সাপের পক্ষে ছিদ্র করা সম্ভব নয়। কিন্তু সকল সাবধানতা অতিক্রম করে সাপ লখিন্দরকে হত্যা করে।
প্রচলিত প্রথা অনুসারে যারা সাপের দংশন করা মৃতদেহ ভেলায় করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। বেহুলা সবার বাঁধা ফেলে তার মৃত স্বামীর সাথে ভেলায় চড়ে বসে। তারা ছয় মাস ধরে যাত্রা করে এবং গ্রামের পর গ্রাম পাড়ি দিতে থাকে। এই অবস্থায় মৃতদেহ পঁচে যেতে শুরু করে এবং গ্রামবাসীরা তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে করতে থাকে। এরপরও মনসার কাছে প্রার্থনা অব্যাহত রাখে বেহুলা। পরে বেহুলা তার শ্বশুরকে মনসার পূজা করাতে রাজি হলে লখিন্দরের প্রাণ ফিরে পায়।
প্রত্নতাত্তিক ইতিহাস ও লোকগাথা সেই বাসরের কাহিনী মানুষকে ভীষণভাবে আকর্ষণ করে। তাই দেশে-বিদেশ থেকে এই স্থানে আসেন দর্শনার্থীরা।
#gokul #behula