বাংলা কথাসাহিত্যের হীরে-‘মানিক’ - জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য (১৯০৮ - ১৯৫৬) Manik Bandyopadhyay

  Рет қаралды 57

Banglalive.com

Banglalive.com

Күн бұрын

প্রেসিডেন্সি কলেজের ক্যান্টিনে কয়েকজন বন্ধুর মধ্যে একদিন তুমুল তর্ক! কোনও নামী পত্রিকা থেকে এক বন্ধুর লেখা অমমোনীত হয়ে ফিরে এসেছে। রেগেমেগে সেই বন্ধু বলে বসলেন, বড় পত্রিকাগুলো নামী লেখকদের লেখা ছাড়া কিছু ছাপায় না। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করে উঠলেন আরেক বন্ধু, বললেন ‘এমন হতেই পারে না। তোমার গল্প ভাল হয়নি বলেই ছাপেনি। পছন্দ হলে নিশ্চয়ই ছাপত।’ বন্ধুও পাল্টা বললেন, ‘প্রমাণ করে দেখাতে পারবে?’ তাকে ভুল প্রমাণ করতে মাত্র তিনদিনের মধ্যে লিখে ফেললেন একটা গল্প! তবে গল্পের শেষে নিজের আসল নাম প্রবোধকুমারের বদলে ডাকনামটাই লিখে দিলেন পাঠিয়ে। কিছুদিনের মধ্যেই সেই গল্প ছাপা হল বিখ্যাত ‘বিচিত্রা’ পত্রিকায়। পাঠক মহলে তুমুল সাড়া ফেলল সেই লেখা। এমনকি সম্পাদক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় নিজেই পারিশ্রমিক নিয়ে হাজির হলেন নতুন লেখকের বাড়িতে। সেদিনের সেই লেখকের নাম মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়! বন্ধুদের ভুল প্রমাণ করতেই তাঁর লেখালিখির সূত্রপাত, যদিও কালক্রমে তিনিই হয়ে উঠলেন বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।
১৯০৮ সালের ১৯ মে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম বিহারের সাঁওতাল পরগণার দুমকা শহরে। পিতৃদত্ত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ডাকনাম মানিক। গায়ের গাঢ় কালো রঙ দেখে আঁতুড় ঘরেই তাঁর নাম রাখা হয় কালোমানিক। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কালোমানিকের কালো গেল খসে, পড়ে রইল শুধু মানিক। ১৯২৬ সালে মেদিনীপুর জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯২৮ সালে বাঁকুড়া ওয়েসলিয় মিশন কলেজ থেকে আই.এস.সি. পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে গণিত বিষয়ে ভর্তি হওয়া। ছাত্রাবস্থায় বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে গল্প লেখার সূচনা এবং সেই সময় ব্যবহৃত ডাকনামেই তাঁর ভবিষ্যতের পরিচিতি। তবে প্রথম গল্প ‘অতসীমামী’ লেখার অনেক আগে ১৬ বছর বয়স থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথমদিকের কবিতাবলি তথা আদিতম সাহিত্যচর্চার কিছু নিদর্শন রয়েছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতা নামের বইয়ে।
কলেজে পড়ার সময়েই বাম রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ফলস্বরূপ, পরপর দু’বছর বিএসসিতে ফেল। ভাইয়ের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া ও সাহিত্যচর্চার খবর কানে গেল দাদার। চিঠিতে ভাইকে লিখলেন, ‘তোমাকে গল্প লিখতে আর রাজনীতি করতে পাঠানো হয়নি! তাই পড়াশোনার খরচ পাঠানো আমার পক্ষে আর সম্ভব নয়। নিজেরটা নিজেই দেখো!’ প্রত্যুত্তরে মানিক জানালেন, ‘আপনি দেখে নেবেন, লেখার মাধ্যমেই একদিন আমি বাংলার লেখকদের মধ্যে প্রথম সারিতে স্থান করে নেব। রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্রের সমপর্যায়ে ঘোষিত হবে আমার নাম!’ তখনই ঠিক হয়ে গিয়েছিল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিয়তি। আর এভাবেই শুরু তাঁর সংগ্রামী জীবনের। দিনরাত এক করে নাওয়া-খাওয়া ভুলে মানিক তখন শুধু লিখছেন আর প্রকাশকদের দরজায় ঘুরছেন। ১৯৩৩ সালে কলকাতায় এল এক বিখ্যাত পুতুল নাচের দল। তা দেখে তিনি এমনই মুগ্ধ হলেন যে, সেই প্রেক্ষাপটে জীবনের রঙ্গমঞ্চকে তুলনা করে লিখে ফেললেন ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। কয়েক বছরের মধ্যেই, ১৯৩৬ সালে প্রকাশিত হল তাঁর আরেক কালজয়ী উপন্যাস ‘পদ্মানদীর মাঝি’।
‘বঙ্গশ্রী’ পত্রিকার সাপ্তাহিক বিভাগে সহকারী সম্পাদক হিসাবেও কাজ পেলেন এরপর। কিন্ত পুরোদস্তুর সাহিত্যকর্মে মন দেবেন বলে সেই চাকরি ছেড়ে দিলেন কিছুদিন পরেই। একের পর এক লিখে চললেন ‘শহরবাসের ইতিকথা’, ‘স্বাধীনতার স্বাদ’, ‘টিকটিকি’, ‘হারানের নাতজামাই’, ‘লাজুকলতা’, ‘হলুদ নদী সবুজ বন’-এর মতো লেখা। ১৯৫০ সালে কমিউনিস্টদের ওপর নেমে এল চূড়ান্ত দমননীতি, বহু পত্রপত্রিকায় বন্ধ হল মানিকের লেখা ছাপানো। পাশাপাশি দীর্ঘদিন শরীরের যত্ন না নেওয়ায় অসুস্থ হয়ে ঘনঘন অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, হাসপাতালে ভর্তি, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত মানিক তখন পুরোপুরি বিপর্যস্ত। সঙ্গে চূড়ান্ত আর্থিক অনটন।
১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর চিরতরে চোখ বুজলেন মানিক। মাত্র ৪৮ বছরের জীবনে দরিদ্র্যতার সঙ্গে চরম লড়াইয়ের পরও বাংলা কথাসাহিত্যের পথিকৃৎ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে জন্ম নিয়েছিল ৪০-টি উপন্যাস, তিনশোর বেশি ছোট গল্প ও অন্যান্য রচনা। নাগরিক জীবনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার এক নিখুঁত চিত্র উঠে এসেছিল তাঁর সমস্ত সাহিত্যকর্মে। তাই তো তিনিই বাংলা কথাসাহিত্যের অমূল্য ‘মানিক’!
#ManikBandyopadhyay #birthdaytribute

Пікірлер
Tuna 🍣 ​⁠@patrickzeinali ​⁠@ChefRush
00:48
albert_cancook
Рет қаралды 148 МЛН
So Cute 🥰 who is better?
00:15
dednahype
Рет қаралды 19 МЛН
coco在求救? #小丑 #天使 #shorts
00:29
好人小丑
Рет қаралды 120 МЛН