Рет қаралды 91
#audiobook #banglastory #banglastories #bengalistory #golpo #voicestory #voice #গল্প #অডিওগল্প #audiobook #audiolibrary #AudioGolpoPremi #অডিওগল্পপ্রেমী #অডিও_গল্প_প্রেমী #audio_golpo_premi
#একটি_নীল_বোতাম
#হুমায়ূনআহমেদ
চমৎকার একটি গল্প • একটি নীল বোতাম • লেখক - হুমায়ূন আহমেদ • জনপ্রিয় অডিও গল্প • bangla audio golpo
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের সাহিত্যে অতীব জনপ্রিয় এক লেখক। ১৯৪৮-এ জন্ম এই লেখক সম্প্রতি লোকান্তরিত হওয়ায় বাংলাদেশে তাঁর অসংখ্য পাঠক পাঠিকা শোকনিমগ্ন। একসময় তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক। তার পর অধ্যাপনা ছেড়ে চলে আসেন চলচ্চিত্রনির্মাণে - বানিয়ে ফেলেন - আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, শ্যামল ছায়া - ছবি বানানোর ফাঁকে ফাঁকে টিভির জন্য নাটক বানানো। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক ছাড়াও পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। পেয়েছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক, ওসমানী পদক, হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার। কিশোর সাহিত্যে অবদানের জন্য তাঁকে দেওয়া হয়েছে অগ্রণী ব্যাঙ্ক শিশু সাহিত্য পুরস্কার। দেশের বাইরেও তাঁকে নিয়ে আছে প্রবল আগ্রহ। জাপান দূরদর্শন NHK তাঁকে নিয়ে তৈরি করেছে পনের মিনিটের ডকুমেন্টারি। অবসরে ম্যাজিক প্র্যাকটিস করেন, ছবি আঁকেন, আড্ডা দেন। তাঁর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন গায়িকা অভিনেত্রী। অনেক টি. ভি. প্রযোজনায় তাঁর একান্ত সহযোগী।
বাবা ছিলেন পুলিশ অফিসার। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাক সেনাবাহিনী। লেখালিখির শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার ফাঁকে ফাঁকে।
সত্তরের দশকে নন্দিত নরকে (১৯৭২) এবং শঙ্খনীল কারাগার (১৯৭৩) নিয়ে উপন্যাস জগতে তাঁর আগমন। এখানে যে নরক তা কিন্তু রাজনীতি দ্বারা উত্তপ্ত, অর্থনৈতিক বৈষম্য দ্বারা ক্ষুব্ধ জগৎ নয়। রাবেয়ার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক জীবন, অন্যদিকে ভালোবাসার দুর্মর প্রত্যাশা, রাবেয়ার আকস্মিক অস্বাভাবিক মৃত্যু, অবৈধ মাতৃত্বের কলঙ্ক, মাস্টার কাকাকে মন্টু কর্তৃক হত্যা, ফাঁসি এসবই আছে। একদিকে প্রেম ও শুশ্রুষার আকাঙ্খা অন্যদিকে সীমাহীন শূন্যতা, সামাজিক অচলায়ন এসবই উপজীব্য। এগুলো কিন্তু বৃহত্তর জীবনের রূপক নয়। 'শঙ্খনীল কারাগার' নাকি সোমেন চন্দের 'ইঁদুর' গল্প পড়ে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা। কিন্তু সোমেন চন্দের নিরাসক্ত জীবনবোধ, বস্তুনিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গি হুমায়ুনের ছিল না - একথা বলেছেন রফিকউল্লাহ খান তাঁর 'বাংলাদেশের উপন্যাস: বিষয় ও শিল্পরূপ' বইতে। (পৃ. ২৬৯) ফলে এখানে আছে আগের বইটির মতই 'ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশা, অপ্রাপ্তি ও যন্ত্রণা'। যুদ্ধকালীন সময়ের বিবিধ প্রসঙ্গ থাকলেও বহির্বাস্তবতার ফ্রেমেই থেকে যায়। চারজন মুক্তিযোদ্ধা কথা বলছে প্রথমটিতে কিন্তু রাজনৈতিক সামাজিক বাতাবরণ তুচ্ছ হয়ে যায়। 'সৌরভ' উপন্যাসেও যুদ্ধ উপজীব্য নয়, আত্মমগ্ন চেতনাই মুখ্য হয়ে ওঠে। '১৯৭১' উপন্যাসে হানাদার সৈন্যপ্রসঙ্গ এলেও যুদ্ধের বীভৎসতা এলেও যৌনতা বড়ো হয়ে ওঠে। সোমেন চন্দ প্রীতি তাই আপাতদৃষ্টিতে কোনো দায়বদ্ধতার প্রশ্নে লেখক-মানসকে প্রাণিত করে না। এরপর তিনি বহু উপন্যাস লিখে গেছেন, বহু ধরনের লেখালিখি করেছেন, জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, কিন্তু দেশ ও সমাজ যখন আপাত ঔজ্জ্বল্যের অন্তরালে ক্রমবর্ধমান তিমিরে তখন তাঁর ভূমিকা চরিত্রবিলাসে, প্রেম ও কিছু বিষাদ ভাবনায়, সমাজ সংকটের জটিলতাতে নয়। ফলে কি বার্তা তিনি তুলে ধরছেন দেশ ও বিশ্ব পরিপ্রেক্ষিতে সে প্রশ্ন অবশ্যই উঠবে।
হুমায়ূন আহমেদ এর প্রতি বাংলাদেশী একশ্রেণীর পাঠক পাঠিকার প্রেমের অংশভাগী হওয়ার চেষ্টায় বিভিন্ন বই থেকে সংগৃহীত তাঁর কিছু প্রেমের গল্প পড়ে ফেলা যাক। 'রূপা' গল্পের ন্যারেটর স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান এক যাত্রীকে একটি ইন্টারেস্টিং গল্প শোনাতে চান। তা হল - একসময় তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার ছাত্র, রসায়নের একটি মেয়েকে তার ভীষণ ভালো লেগে যায়। কিন্তু ঘটনাচক্রে ভুল ঠিকানায় অন্য মেয়েকে চিঠি দিয়ে জানায় - আমি তাকে বিয়ে করতে চাই। তাকে রাজি হতেই হবে। ড্রাইভার ভুল ঠিকানা দিয়েছিল। সে এমন একটি মেয়ের বাড়ির দরজায় চলে আসে যে রসায়নের ছাত্রীটি নয়। সকাল নটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত এই মেয়েটির বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকে, ঢালাও বর্ষণেও অবিচল। একসময় জানা যায় মেয়ে তার অবস্থা দেখে কাঁদছে, মেয়ের বাপ পুলিশ আনতে উদ্যত। শেষপর্যন্ত মেয়েটি তাকে বাড়িতে ডেকে নেয়, হাত ধরে খাবার টেবিলে নিয়ে যায়। এই মেয়েটির সঙ্গেই তার বিয়ে হয়। এটাই তার ইন্টারেস্টিং গল্প। রোমান্টিক ইচ্ছাপুরণের বিভ্রান্তির গল্প। 'একটি নীল বোতাম' গল্পের ন্যারেটর এশা বলে একটি মেয়েকে ভালো বেসেছিল। এই বর্ণক রঞ্জু এশার বাবার সঙ্গেই গল্প করে, মেয়ের সঙ্গেও। রঞ্জু একটি অ্যাড ফার্মের সামান্য কর্মী। স্বপ্ন মশগুল রঞ্জু তার হোস্টেল ঘরে ফুল, ছবি দিয়ে সাজায়, দেওয়াল চুনকাম করে। বন্ধুরা এসে ঠাট্টা করে। ইচ্ছে করে ঘর নোংরা করে। গল্পের ক্ল্যাইম্যাক্স হল - এশার বিয়ে ঠিক হয় ব্যারিস্টারের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে। রঞ্জু একটি নীল বোতাম পেয়েছিল এশার। এটাকেই সে অপরাজিতা ফুল মনে করে। এ হল প্রেম ব্যর্থতার, ধনী দরিদ্রের মনোকষ্টের সনাতন গল্প। 'কল্যানীয়াসু' গল্পে আছে প্রেমে ব্যর্থতায় দীর্ঘশ্বাস, পূর্বতন স্ত্রীকে ফিরে পাবার আকুতি, রুশ চিত্র গ্যালারি, ডস্টয়েভস্কি নেহাৎই বাহ্যিক উপকরণ। জয়ী যে কেন বয়স্ক স্যারকে ভালোবেসেছিল, কেন সে শিল্পী স্বামীর প্রেম প্রত্যাখ্যান করল, কেন এ 'শূন্যতা বুকের ভেতরে হা হা করে' তার কারণ সন্ধানে তৎপর নন লেখক। 'দ্বিতীয়জন' গল্পের নববিবাহিত প্রিয়াংকা-র অসুখ, পাগল বোধ, অস্থিরতা, পাশের ঘরে কিসের যেন শব্দ, এ কেন 'ভয়ঙ্কর কোনো অসুখ' এ প্রশ্ন উঠবে। এ গল্প, প্রিয়াঙ্কা ও জাভেদ এর গল্প পাঠককে জড়াবে কোন সূত্রে? 'চোখ' গল্পে মনস্তত্ত্ববিদ মিসির আলির কাছে আসে টেক্সাসের গণিত অধ্যাপক রাশেদুল করিম, যে তার দাম্পত্যের কথা, স্ত্রী জুডির ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার কথা, রাশেদুলের আঁকা ছবি ইত্যাদি।