Рет қаралды 16,527
প্রথমেই বলে নিই বাংলা বাজারে আমি বলেছিলাম কেজরিওয়াল অন্তত ৪৫ টার মত আসন পাবে, কংগ্রেস ১/২ টো আর বিজেপি বাকি ২২/২৩টা। বলেছিলাম যে লোকসভাতে যে ভোট বিজেপির দিকে গিয়েছিল তার বেশিরভাগই আবার কেজরিওয়ালের দিকে ফিরে আসবে, এবং সেটাই ছিল আমার এই অ্যাসেসমেন্ট এর প্রথম ভিত্তি। হয়েছে কী? আপ এবং কংগ্রেস এক সঙ্গে লড়েছিল লোকসভার ভোট, তাদের মিলিত ভোট ছিল ৪৩%। বিজেপির ভোট ছিল ৫৪.৩৫%। এবারে ভোটের পার্সেন্টেজ কত? বিজেপি পেয়েছে ৪৫.৫৬% ভোট। মানে প্রায় ৯% ভোট বিজেপির কাছ থেকে সরেছে, যা ২০২০ র বিধানসভাতে সরেছিল ১২% এর মত আর পুরোটাই গিয়েছিল আম আদমী দলের দিকে, আপ জিতেছিল ৬২ টা আসন। এবারে ৯ % ভোট বিজেপির কমেছে, আপ পেয়েছে ৪৩.৫৭% ভোট কংগ্রেস পেয়েছে ৬.৩৪% ভোট। কেবল ভোট জুড়ে দিলেই হত ৫০% এর মত ভোট, বিজেপির ৪৫.৫৬% ভোটের চেয়ে সাড়ে চার শতাংশ বেশি এবং তার ফলে বিজেপি ১৮/১৯ টার বেশি আসন কোনওভাবেই পেতো না। কিন্তু তা হয় নি। বিজেপি ৪৮ টা আসন পেয়ে ক্ষ্মতায় এসেছে। কিন্তু কেউ যদি এই অংকের হিসেবটাকেই মানে জোট হল না তাই আপ হেরে গ্যালো এরকম বলেন, মানে এটাকেই একমাত্র কারণ হিসেবে তুলে ধরেন তাহলে বলবো বিষয়টা অত সোজা নয়। মানে রাজনীতি অমন সরল গণিতের হিসেব মেনে চলে না। জোট হলেই বিজেপি হারবে, জোট না হলেই জিতবে এমন নয়, আবার জোট হয়নি সেটা যে বিজেপিকে বিরাটভাবে সাহায্য করেছে, সেটাও সঠিক। আসুন অংকের বাইরের রাজনীতিটাকে দেখা যাক। এই ফলাফল আমাদের কাছে যে সত্যিগুলো তুলে ধরলো সেগুলো নিয়ে আলোচনাটাও খুব জরুরি। প্রথমটা হল বিজেপির সঙ্গে লড়তে হলে পুরো দস্তুর লড়তে হবে, যে রাজ্যে যে দল বিজেপির মূল বিরোধী তাকে বিজেপির আইডিওলজি, বিজেপি আর এস এস এর আদর্শের বিরুদ্ধে লড়তে হবে, মাঝামাঝি অবস্থান নিলেই তা ব্যুমেরাং হবেই। আরেকটু খোলসা করা যাক। আপনাদের মনে আছে কেজরিওয়াল বলেছিলেন দিল্লির সরকার স্কুলে স্কুলে গিয়ে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বার করবে, ইন ফ্যাক্ট টার্গেট হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন বাঙালি মুসলমানেরা। ভাবা যায়? উনি যা বলছিলেন, এখানে শুভেন্দু অধিকারী দিলীপ ঘোষ তো সেই কথাই বলেন। কাজেই দিল্লির সংখ্যালঘু মানুষজন, যারা এর আগে দু দুবার তাদের ভোট উজাড় করে দিয়েছিলেন আপ এর ভোট বাক্সে, তারা এবারে হয় ভোট দিতেই এলেন না, নাহলে কংগ্রেসকে ভোট দিলেন, ঐ যে দু শতাংশের বেশি ভোট বৃদ্ধি তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব কেজরিওয়াল সাহেবের। দিল্লিতে দাঙ্গা হচ্ছে, গ্রেপ্তার হচ্ছে উমর খালিদ, মীরন হায়দার, আসিফ ইকবাল তনহা, শিফা উর রহমান, নাতাশা নারওয়াল, দেভাঙ্গনা কালিতা, শরজিল ইমাম আরও অনেকে। কেজরিওয়াল একটাও কথা বলেছেন? শাহীন বাগে ঐ ঠান্ডায় মানুষজন সি এ এর বিরুদ্ধে ধর্ণায় বসে আছেন, কেজরিওয়াল গেছেন? জে এন ইউ তে এ বিভিপির গুন্ডারা গিয়ে ভাঙচুর করলো, মেরে মাথা ফাটিয়ে দিল, কেজরিওয়াল গেছেন? যান নি। বুলডোজার ভাঙতে গেছে বাড়ি ঘর, সামনে দাঁড়িয়েছেন সিপিএম নেত্রী বৃন্দা কারাত, কেজরিওয়াল গেছেন? যান নি। আসলে রাজনীতিবিহীন এক রাজনীতি আমদানি করার চেষ্টা তিনি করছিলেন, যা দিয়ে আর যাই হোক বিজেপি আর এস এস কে আটকানো অসম্ভব।