Рет қаралды 2,868
Link: - • Eroali Baro Panch Aani...
মুরশিদাবাদ জেলার এড়োয়ালি গ্রামের পূজোর বিশেষত্ব হল এখানে একই রাজপরিবারে ১৩ টি কালিপুজো,আর সেই কালিপুজোকে কেন্দ্র করে মত্ত গোটা গ্রাম।আর কালিপুজোর রাত মানেই ফিরে যেতে হয় সেই রাজাদের কালে।জানা যায় এই কালিপুজোর প্রতিস্ঠা করেন রাজা রামজীবন রায় আজ থেকে প্রায় চারশত বছর আগে।তাঁর রাজত্বকালে একটা রাজবাড়িতে একটিই কালিপুজো হত।সারা রাজবাড়ি আলোয় ঝলমল করত,সমস্ত ধর্মের মানুষ নিমন্ত্রিত থাকত রাজবাড়িতে।পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জায়গার প্রজারা রাজাদের গান শুনিয়ে,নাঁচ দেখিয়ে রাজাদের খুশি করে উপহার নিয়ে বাড়ি ফিরত।রাজা রামজীবন-ও ছিলেন প্রজাবৎসল।প্রজাদের মঙ্গল কামনায় তিনি ছাগ,মেষ ও মহিষ বলি দিতেন।কিন্তু কালের নিয়মে ভাগ হয়েছে রাজবংশ,বেড়েছে কালীর সংখ্যা।প্রথমে এই রাজপরিবার 'রায় রাজপরিবার' নামে পরিচিত থাকলেও রাজা রামজীবন রায় এর বংশধরেরা বিভিন্ন প্রজাবৎসল কাজ করবার জন্য ব্রিটিশদের থেকে 'চৌধুরী' উপাধি লাভ করেন,সেই থেকেই এই রাজপরিবার 'রায়চৌধুরী রাজপরিবার' নামে পরিচত।
রাজা রামজীবন এর তিনটি প্রপৌত্র ছিল-রাজা দেবদত্ত রায়চৌধুরী,রাজা ইন্দ্রমণি রায়চৌধুরী এবং রাজা শ্যামসুন্দর রায়চৌধুরী,এদের রাজবংশ যথাক্রমে বড়পাঁচআনি,ছোটো পাঁচানি এবং ছয়ানি রাজপরিবার নামে পরিচিত।
বড়পাঁচানিতে পাঁচটি কালী-ধর্ম/ষষ্ঠী,বেল,কুল,টুংগী এবং শ্যামরুপী। ছয়ানি রাজপরিবারের চারটি কালী- বড়মা,মঠ,নিম ও চাতর বুড়ি।ছোটোপাঁচানি রাজপরিবারে চারটি কালী-ধর্ম/ষষ্ঠী,মোল,আমড়া এবং বেল(এই বেল কালীটিতে শুধু ঘট পুজো করা হয়)।এখানে ধর্মকালী ও ষষ্ঠীকালীকে বড়পাঁচানি ও ছোটোপাঁচানি রাজপরিবার পালা করে চালায়। বেশিরভাগ কালীকেই 'বুড়ি' বলেই ডাকা হয়।জানা যায়,যে গাছের নীচে যে ঠাকুরের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো,সেই গাছের নামানুসারে সেই কালীর নাম রাখা হয়েছে।বড়পাঁচানির বেল,ছোটোপাঁচানির মোল এবং ছয়ানির মঠ কালীতে পঞ্চমুণ্ডীর আসন বিদ্যমান।বড়পাঁচানির বেলকালীতে একমাত্র ব্যাঘ্রচর্মের আসনের ওপর বসে পুরোহিত পুজো করেন।এই বেল কালী এবং মঠ কালীতে কারন অর্থাৎ মদ দিয়ে ঘট ভরা হয়।
জানা যায়,বড়পাঁচানির রাজা চন্দ্রকান্ত রায়চৌধুরী বেলকালীতে পুজো করানোর জন্য সাধক বামাখ্যাপাকে অনুরোধ করে আনতেন।এবং ছয়ানির রাজা কার্ত্তিক রায়চৌধুরী-ও তাঁকে এনে একবার মঠ কালীতে পুজো করিয়েছিলেন।
কালের নিয়মে রাজারা গেছেন,গিয়েছে তাঁদের রাজ্যপাট।শুধু ফেলে গেছেন তাঁদের প্রতিষ্ঠা করা পুজোগুলো ও তা চালানোর জন্য রাজবংশ।মহারাজ রাজা রামজীবন রায় এর প্রতিষ্ঠিত কালীপুজোর জৌলুস আজও একই ভাবে বজায় রেখেছেন 'রায়চৌধুরী রাজপরিবারের' সদস্যরা।এই পুজো দেখতে আজও ভিড় জমান বিভিন্ন জেলার মানুষ।