Рет қаралды 33,607
‘গরমে আবার স্টাইল?’ ভ্রু কুঁচকে এই প্রশ্ন করার দিন শেষ। শুধু মানুষ না, এই সময়ে প্রকৃতিও থাকে ‘স্টাইল মুডে’। এই ব্যাখ্যা সুপারমডেল আসিফ আজিমের। দেশের ফ্যাশন হাউসগুলোয়ও ঈদের আগে তাই গরমের পোশাক বিক্রি চলছে এখন। গরম আর বৃষ্টির কারণে এ দেশের প্রকৃতি এখন নানা রঙে বর্ণিল। গাছে গাছে ফুল। সবুজ পাতা। প্রকৃতির এই রঙের কারণেই আলাদা করে ঝলমলে রঙের পোশাক পরার দরকার পড়ে না। তাই পোশাকের রং কিছুটা হালকাই রাখেন ডিজাইনাররা। ফ্যাশন হাউস ওটুর স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার জাফর ইকবালের সঙ্গে কথা বলেও তেমনটা বোঝা গেল। তিনি বলছিলেন, বিষয়টা কিন্তু এমন না যে, গরমে ছেলেদের পোশাকে শুধু সাদা রং চলছে। সব রঙের দেখা মিলবে গরমের পোশাকে। তবে সেখানে গাঢ় রং না নিয়ে সব ধরনের রঙেরই হালকা শেড বেছে নেওয়া হয়। এতে গরমে একধরনের স্বস্তি পাওয়া যায়।
কাজের প্রয়োজনে বা আয়োজন বুঝে প্রতিদিন পোশাক নির্বাচন করতে হয় আমাদের। তাই ফুলহাতা শার্ট, হাফহাতা শার্ট, পলো শার্ট বা টি-শার্ট সবটাই পরার চল আছে। প্যান্টের ক্ষেত্রেও একই কথা-জিনস, গ্যাবার্ডিন বা পাতলা কাপড়ের খাটো প্যান্ট সবই দেখা যায়। দিনের অনেকটা সময়ই বাসায় বা বাসার কাছাকাছি দূরত্বে তরুণেরা খাটো প্যান্ট পরতে ভালোবাসেন। বন্ধুদের সঙ্গে ‘হ্যাং আউটের’ বেলায়ও খাটো প্যান্টের সঙ্গে অনেকে টি-শার্ট বা পলো শার্ট পরছেন। তবে সব পোশাকেই সুতি কাপড়ের প্রতি নির্ভরতা। ক্যাটস আইয়ের পরিচালক ও ডিজাইনার সাদিক কুদ্দুস মনে করেন, ‘গরমে আরামের কথা ভাবলে সুতি কাপড়ের বিকল্প নেই। শার্টের নকশায়ও আছে নতুনত্ব। সব সময়ের জনপ্রিয় চেক শার্ট ছাড়াও নানা ধরনের ছাপা নকশা করা হয়েছে।’
পকেট ছাড়া শার্ট আছে। তবে চলতি ধারার শার্টে থাকছে পকেটের ব্যবহারও। এক ও দুই পকেটের এসব শার্টের কাঁধ, কলার বা হাতার ভাঁজে ছোট ছোট পরিবর্তন চোখে পড়বে। কলারেও আছে ভিন্নতা। অনেক হাউসের শার্টেই উঁচু কলার, ব্যান্ড কলার ইত্যাদি দেখা গেল। এক রঙের পোলো শার্ট ছাড়াও আছে ছাপা নকশার পোলো। ছাপায় আছে ফুল, জ্যামিতিক নকশা, ডটপ্রিন্ট, বলপ্রিন্টসহ নানা ধরনের সুপারহিরোর অবয়ব। ডেনিম শার্টেও নানা ধরনের ওয়াশ করে গরমে পরার উপযোগী করা হয়েছে। জিনসের প্যান্টে ওয়াশ হচ্ছে অনেক ধরনের। তবে গরমে গ্যাবার্ডিন প্যান্টের চাহিদা থাকে বেশি। মেনজ ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘গ্যাবার্ডিন প্যান্টে আরাম পাওয়া যায় বলে এই সময়ে তা ভালো বিক্রি হয়। তবে ইলাস্টিক ডেনিমের প্যান্টও আছে। এ ছাড়া জিনস তো আছেই।’
এবার নতুন দেখা যাচ্ছে জগার স্টাইলের থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট। হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঝুলের এই প্যান্টের শেষ অংশ পায়ের সঙ্গে লেগে থাকে।
শার্ট বা টি-শার্টে এখন যেসব রং বেশি জনপ্রিয় তার একটা তালিকা জানা গেল ডিজাইনারদের সঙ্গে কথা বলে। এর মধ্যে আছে হালকা নীল, সাদা, ঘিয়ে, বাদামি, সবুজাভ, হালকা কমলা, ফিরোজা, নীল, ছাইরং, হালকা গোলাপি ইত্যাদি। গরমে পরার জন্য এসব রঙের ওপরই আস্থা রাখতে পারেন। কারণ গাছের ডালে যখন আগুনঝরা কৃষ্ণচূড়া, গায়ে তখন থাকনা একটু হালকা নীল শার্ট! স্টাইল তো সেখানেই।সুপারমডেলের গরমের পোশাক
অনেক বছর ধরেই ভারতের মুম্বাইতে আছেন বাংলাদেশের ছেলে আসিফ আজিম। মডেল থেকে হয়েছেন সুপারমডেল। বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও বিভিন্ন দেশের ফ্যাশন শোতে অংশ নিয়েছেন শো স্টপার হিসেবে। ফ্যাশন রানওয়ে থেকে জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের ‘কাভার বয়’ হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। বিখ্যাত ফ্যাশন সাময়িকী ভোগ-এর বেশ কয়েকটি প্রচ্ছদে এসেছেন এই মডেল। ছিলেন বিগ বস সেভেনের একজন প্রতিযোগী। আসিফ আজিম সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছিলেন। ব্যস্ততার মাঝেও নকশার জন্য সময় বের করে ফটোশুট করেছেন আসিফ। ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হওয়া সেই ফটোশুট চলেছে দুপুর পর্যন্ত। এই গরমে ঘরের বাইরে (আউটডোর) করা সেই ফটোশুটে আসিফ পরেছিলেন আরামদায়ক কিছু পোশাক। এই তারকা মডেল জানালেন, ‘শীতে সাধারণত নানা স্তরের রং পোশাকে ব্যবহার করা যায়। গরমে সেটা যায় না, কারণ বাইরের কড়া আবহাওয়া শরীরে একধরনের অস্বস্তি দেয়। তা ছাড়া এই সময়ে প্রকৃতিতে এত বেশি রং থাকে যে, নিজেরা কিছুটা কম রং পরলেই চলে। আমি যেমন গরমে টি-শার্ট পরতেই বেশি ভালোবাসি।’
তাই বলে যে অন্য কিছু এই সময়ে পরেন না তেমনটাও না। ঘরের বাইরে সব ধরনের পোশাকই পরেন। রোদে খুব বেশি ঘোরাফেরা করতে হয় না বলেই সব ধরনের পোশাক পরার ‘সাহস’ দেখান। আসিফ বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা আপনি কেমন জায়গায় যাচ্ছেন সেটা বুঝে পোশাক বাছাই করুন।’
জিনস বা গ্যাবার্ডিন দুই ধরনের প্যান্টই পরেন। তবে সেটা শার্ট বা টি-শার্টের ধরন বুঝে। আর গরমে ফিট থাকতে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অনুরোধ তাঁর।