Рет қаралды 68,562
ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ। বাংলাদেশের তিন বাহিনীর প্রধানগণ একই ব্যাচের। সদ্য নিয়োগ পাওয়া সেনাবাহিনী প্রধান লে. জে. ওয়াকার উজ জামান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ, নৌবাহিনী প্রধান হিসাবে দায়িত্বরত অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান ১৯৮১ সালে এস এসসি পাশ করেন। তারা তিন জনই সামরিক. নৌ ও বিমান বাহিনীর ১৩ তম ব্যাচের সসাময়িক। বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এর আগে অষ্টম ব্যাচের তিন বাহিনীর প্রধানগণ প্রথম ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, লে. জে. ওয়াকার- উজ- জামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরবর্তী প্রধান হিসেবে মনোনীত এবং জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছেন। আগামী ২৩ শে জুন তিনি সেনা প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
জেনারেল ওয়াকার- উজ- জামান ১৯৬৬ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস শেরপুর জেলায়। তিনি মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ এবং যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজে লেখাপড়া করে লন্ডনের কিংস কলেজে মাস্টার্স করেন।
ওয়াকার-উজ-জামান ১৯৮৫ সালে সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। তিনি ২০১৭ সালে ফেব্রুয়ারিতে সেনা সদর দপ্তরের সামরিক সচিবের দায়িত্ব পান। তিনি একটি পদাতিক ব্যাটালিয়ন, একটি পদাতিক ব্রিগেড এবং পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিকস এবং সেনা সদরদপ্তরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেনা সদরদপ্তরের সামরিক সচিবের শাখাতেও তিনি বিভিন্ন ভূমিকায় কাজ করেছেন। তিনি ২০২৩ সালের ৫ই নভেম্বর আর্মি সার্ভিস কোরের সপ্তম ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট‘ হিসেবে অভিষিক্ত হন।]
ওয়াকার-উজ-জামান অ্যাঙ্গোলা ও লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ শান্তি মিশনে সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান প্রয়াত জেনারেল মুস্তাফিজুর রহমানের জামাতা। যিনি ১৯৯৭ সালের ২৪শে ডিসেম্বর থেকে ২০০০ সালের ২৩ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান হিসাবে ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ১৯৬৭ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। নাজমুল হাসান ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চারটি যুদ্ধজাহাজের কমান্ডার ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ নেভাল একাডেমি, নেভাল এভিয়েশন এবং নৌবাহিনীর স্পেশাল ফোর্স সোয়াডসের কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে নাজমুল হাসান সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (অপারেশনস) এবং চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার, বাংলাদেশ নৌবহরের কমান্ডার নৌ সদর দপ্তরের নেভাল অপারেশনের পরিচালক এবং নেভাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক ছিলেন। অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান ২০২০ সালের ১৭ই মার্চ মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পার্সোনাল) পদে নিযুক্ত হন।
অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সামরিক কৌশলগত শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। তিনি মিরপুরের সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেভাল ওয়ার কলেজ থেকে অনার্সসহ স্টাফ কোর্স যুক্তরাষ্ট্র থেকে সম্মানসূচক নেভাল কমান্ড কোর্স এবং বাংলাদেশে জাতীয় প্রতিরক্ষা কোর্স সম্পন্ন করেন। অ্যাডমিরাল নাজমুল হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিরক্ষা শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন একজন তিন তারকা এয়ার মার্শাল। ২০২৪ সালের ১১ই জুন থেকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি ১৯৬৬ সালের ২০শে জুন ঢাকার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হাসান মাহমুদ খাঁন ১৯৮৬ সালে ১৫ই জুন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জিডি (পি) শাখায় কমিশন লাভ করেন। তিনি একজন ফাইটার পাইলট এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির কোয়ালিফাইড ফ্লাইং ইন্সট্রাক্টর। তিনি সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিকল্পনা) এবং বিএএফ ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর এয়ার অফিসার কমান্ডিং (এওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এয়ার ভাইস মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ, মিরপুরের পাশাপাশি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটি থেকে ডিফেন্স স্টাডিজে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি সিয়েরা লিওনে সামরিক পর্যবেক্ষক এবং ডিআর কঙ্গোতে সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সৈয়দ সাকিব
বিএনএ নিউজ টুয়েন্টি ফোর