Рет қаралды 71
কবি দিলীপ পালের উপন্যাস “অজয় নদীর পারে” উপন্যাস ও মণিমালার দেশের পত্রিকা উদ্বোধন # গত ১৬ ই মার্চ কলকাতার জীবনানন্দ সভাঘরে। একই সাথে প্রকাশিত হলো দুটি পত্রিকা - মণিমালার দেশ পত্রিকা গোষ্ঠীর এবারের কবিতা সংখ্যা নীরদা ও গল্প সংখ্যা -তুলসী । অনুষ্ঠানের আয়োজক মণিমালার দেশ। যাঁরা এই উপন্যাসটিকে তাঁদের গত শারদ সংখ্যায় জনসমক্ষে এনেছিলেন। দুটি পত্রিকা ও উপন্যাসের মোড়ক উন্মোচিত হলো এই সময়ের মান্য বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক ও গবেষক প্রাবন্ধিক ড. পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাতের ছোঁয়ায় । উপস্থিত ছিলেন প্রাবন্ধিক ড .দেবযানী ভৌমিক চক্রবর্তী, দূরর্দশনের প্রাক্তন প্রোগ্ৰামিং এক্সিকিউটিভ অফিসার ড. কৃষ্ণপদ দাস ও বাচিক শিল্পী সুস্মিতা দাস। ডাঃ রমেশ চন্দ্র বেরা সমরেশ চন্দ্র বেরা প্রবীররঞ্জন মন্ডল ও দিলীপ পাল । অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় মধুমিতা গঙ্গোপাধ্যায় । এই আয়োজনে এক সুন্দর অনুভূতি ছুঁয়ে যায় সকল প্রাণে।
সূচনায় বৃক্ষের পায়ে জল দিয়ে শিশুসাহিত্যিক পার্থজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন দিলীপ পাল আমার প্রিয়জনদের মধ্যে একজন । এ উপন্যাস মণিমালার দেশ শারদ সংখ্যায় প্রকাশিত হবার পর আমার হাতে তুলে দেয় ত্রিপুরা যাওয়ার পথে এয়ারপোর্টে । নদী কেন্দ্রীক লেখা পড়তে পড়তে মনে পড়ে যায় শান্তিনিকেতনের পথে অজয়ের কথা । মনে পড়ে সেই কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের কথা । অজয়ের ভাঙ্গনের পাড়ে যার জন্ম । ভাঙ্গা মন জুড়তে হয় । নদী নিয়ে কত লেখা পড়েছি। তার আবদারে ভূমিকাও লিখতে হয় এবং তার নিষ্ঠাকে আমি শ্রদ্ধা করি । তার লেখায় দু হাজার সালে বিধ্বস্ত বন্যায় যখন অজয়ের পাড় ভেঙে যায় নদী হয়ে ওঠে তখন সমুদ্র । এক আদিবাসী অনাথ সন্তানের জীবন কাহিনী তার উত্তরণের সংকট পথ ও পরিধি পেরিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছাতে যে আত্মত্যাগ ও অধ্যবসায় লাগে তা চরিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে । পৃথিবীর ইতিহাস দেখেছে শ্রমিক মালিকের লড়াই দ্বন্দ্ব । পুঁজির সাথে সংঘাত । ক্ষমতার আস্ফালন । এই উপন্যাসে সিঙ্গুর আন্দোলন আস্ত একটি কারখানা বাঁচানোর জন্য মালিক শ্রমিক ঐক্যবদ্ধ ভাবে যে প্রচেষ্টা দেখানো হয়েছে তা ইতিহাসে বিরল । করোনা মহামারী যন্ত্রনার মধ্যে অশান্ত স্বার্থেনেষী মানুষের দাপাদাপি মৃত্যুর ট্র্যাজিক পরিযায়ী শ্রমিকের পথ রুদ্ধ হয় । সামনা সামনি মৃত্যু কে দেখতে পায় । তবু রুখে দাঁড়ায় । মৃত্যুর মাঝে ফিরে পায় বাঁচার টুকরো আলো । অবাস্তব অবৈজ্ঞানিক প্রকৌশল প্রশাসনের নগ্ন রূপ বেরিয়ে আসে দিলীপ পাল এর লেখায় । এই উপন্যাস এক ভালোলাগার শ্রমের ফসল । পাঠকের কাছে আলোচনা সমালোচনায় সমৃদ্ধ হোক এই কামনা করেন অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে গান কবিতা কথায় আপ্যায়নে পরিপূর্ণতা পায়। সবশেষে ড. কৃষ্ণপদ দাস ও সুস্মিতা দাসের সমবেত কবিতায় বসন্ত সরগম হয়ে ওঠে।
কবি ও বিশিষ্ট সমাজসেবী দিলীপ পাল ও তাঁর সহযোগীদের সমাজ ও পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে একটি বিশেষ অবদানের কথা এখানে উল্লেখ্য। বলা যায় অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ অভিনবত্ব । অতিথিদিগকে অবহেলিত কচুরিপানা দিয়ে তৈরি ব্যাজ বুকে পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় এই অনুষ্ঠানে। পালবাবু বলেন, এই ব্যাজ মনীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের উদ্ভাবিত এক শিল্পকর্ম গত ২০২০ সালে করোনার সময়। কৃষি সাহিত্যের স্বপন কুমার ভৌমিকের উদ্যোগে মাজদিয়ার শিল্পী দেবাশিস কুমার বিশ্বাসের মাধ্যমে নদীয়ার চন্দননগর কো-অপরেটিভ সোসাইটির মহিলা শিল্পীবৃন্দের হাতে তৈরি। এ এক অনাবিল আনন্দ প্রকাশ করেন অতিথিবৃন্দ। নমস্কার । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য- এই দিলীপ পাল ও তাঁর সংগঠনের সহযোগীবৃন্দই দেশে প্রথম কচুরিপানার তৈরি রাখির প্রথম ক্রেতা , যা সারা দেশে এক আনন্দঘণ আলোড়ন তুলেছিল, বাংলার মহিলাদের হাতে প্রথম কচুরিপানার রাখির জয়জয়কার করেছিল দেশের সারা সংবাদমাধ্যমগুলি। আজ আবার কচুরিপানার ব্যাজ পরিয়ে আরো একধাপ এগোলেন দিলীপবাবু ও সহযোগীবৃন্দ। ধন্যবাদ।