Рет қаралды 4,263
১৮৯৩ সালের ৫ নভেম্বর জন্ম প্রতিমা দেবীর। টুকটুকে সুন্দরী শিশু প্রতিমাকে খুব পছন্দ ছিল রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর। তিনি বলেছিলেন, 'এই সুন্দর মেয়েটি কে আমি পুত্রবধূ করব। আশা করি ছোটদিদি তাঁর নাতনীটি আমায় দেবেন।‘ নিতান্ত অসময়ে ১৯০২ সালের ২৩ নভেম্বর মৃণালিনী দেবীর মৃত্যু হলে তাঁর ইচ্ছে অপূর্ণ থেকে যায়।
মাত্র ১১ বছর বয়েসে প্রতিভার বিবাহ হয় গুণেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট বোন কুমুদিনীর ছোট নাতি নীলানাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পূর্ণিমা দেবী লিখেছেন, 'আমার ঠিক মনে নেই, বোধহয় বাংলা ১৩১০ সালের ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি প্রতিমা দিদির ফুলশয্যার নিমন্ত্রণ ছিল। …..আমি গিয়েছিলুম। বেনেপুকুরে ওঁর শ্বশুরবাড়ি ছিল। ‘ফাল্গুন মাসে বিয়ের পর প্রতিমা
জোড়াসাঁকোতেই ছিলেন। বৈশাখ মাসে 'ভালো দিন’ দেখে প্রতিমাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাওয়া হল। সেখান থেকে সকলে মিলে গঙ্গার ধারে মহারাজা যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের বাগানবাড়ি 'সুরধুনী কাননে' বেড়াতে গেলেন। কয়েক দিন সেখানে থাকার পর একদিন কারোর বারণ না শুনে নীলানাথ একটা চাকরকে নিয়ে নদীতে সাঁতার শিখতে গেলেন। হঠাৎ আসা বানে নীলানাথ ডুবে যান।
এই ঘটনাটি প্রতিমা দেবী আর তাঁর এক সঙ্গিনী ছাদ থেকে দেখেছিলেন। অপয়া অপবাদ নিয়ে জোড়াসাঁকোতেই ফিরে এলেন প্রতিমা। বৈধব্যজীবন যাপন করলেন পাঁচটি বছর। মৃণালিনী দেবীর ইচ্ছে অজানা ছিল না রবীন্দ্রনাথের। রথীন্দ্রনাথ বিলেত থেকে ফিরে আসার পর রবীন্দ্রনাথ গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলেছিলেন, 'তোমার উচিত প্রতিমার আবার বিয়ে দেওয়া।বিনয়িনীকে বল যেন অমত না করে।
ওর জীবনে কিছুই হল না। এ বয়সে চারিদিকের প্রলোভন কাটিয়ে ওঠা মুশকিল। এখন না হয় মা-বাবার কাছে আছে, এর পরে ভাইদের সংসারে কৃপাপ্রার্থী হয়ে থাকবে। সেইটাই কি তোমাদের কাম্য? না বিয়ে দেওয়া ভালো, সেটা বুঝে দেখ। ‘গগনেন্দ্রনাথ রাজি করিয়েছিলেন বিনয়িনী দেবী এবং প্রতিমা দেবীকে। বলেছিলেন, 'যা তোর হয়ে গেছে সেটা স্বপ্ন ভেবে নিস।এখন নতুন জীবন আরম্ভ করতে হবে'। ১৯১০ সালের ২৭ জানুয়ারি প্রতিমা দেবী আর রথীন্দ্রনাথের বিবাহ হল। মৃণালিনী দেবীর ইচ্ছে পূর্ণ হল।
বিয়ের পর প্রতিমা দেবীকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত রথীন্দ্রনাথ ভগ্নিপতি নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়কে লিখেছিলেন, 'প্রতিমা এখন আমার…..সে যে কী চমৎকার মেয়ে তোমাকে কী করে লিখি।‘ জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে এই প্রথম বিধবাবিবাহ। বিয়ের পর নবদম্পতি শান্তিনিকেতনে ছিলেন কয়েকমাস।
সে সব দিনের কথা স্মরণ করে প্রতিমা দেবী বলেছিলেন, "আমার শিক্ষা-দীক্ষা যা কিছু সব আমার স্বামী এবং শ্বশুরের কৃতিত্ব। ….যখন প্রথম এখানে এলাম বাবামশাই শিশু বিভাগের কুড়ি-পঁচিশটি ছোটো ছোটো ছেলে ও আশ্রমের অন্যান্য সকলকে দেখিয়ে বললেন, 'বৌমা এই সব নিয়েই তোমার সংসার'। শৈশব থেকেই আমিও তাই বুঝেছি"।
রবীন্দ্রনাথ তাঁকে গ্রহণ করেছিলেন গভীর স্নেহে।পতিসর থেকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন - “আমার সংসারকে তুমি তোমার পবিত্র জীবনের দ্বারা দেবমন্দির করে তুলবে এই আশা প্রতিদিনই আমার মনে প্রবল হয়ে উঠচে"। এর কিছু পরে রথীন্দ্রনাথ- প্রতিমা গেলেন শিলাইদহে।
সেখানে মিস বুর্ডেটের কাছে সেলাই শেখার পাশাপাশি ইংরেজিতে কথাবার্তা শুরু করতে বললেন রবীন্দ্রনাথ। জানতে চাইলেন রথীন্দ্রনাথ তাঁকে ‘সেই অ্যাস্ট্রোনমির বই পড়ে’ শোনাচ্ছেন কী না। এত আয়োজন সত্ত্বেও রথীন্দ্রনাথ - প্রতিমা দেবী সম্পর্কে এল ভাটা। জীবনের শেষ পর্যন্ত যাতে আর কখনও জোয়ার লাগল না।
#biography
#viralvideo
#jiboni
#bangla
#pratimadebi
#rathindranathtagore
#rabindranaththakur
#information