Рет қаралды 108,384
🌹আদম(আঃ)কিভাবে ক্ষমা পেয়েছিলেন ?🌹
⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛⬛
✍🏾আমাদের সমাজে ইসলামের নামে অনেক বিভ্রান্তিমূলক কথা প্রচলিত আছে। এমনকি নবীদের নামেও এমন কথা প্রচলিত আছে যা তাদের মর্যাদার বিপরীত। আজকে এমনই একটি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
-
✍🏾 আমাদের সমাজে প্রচলিত কথাটি নিম্নরুপঃ
-
👉🏾[❌📔হাদীসটি] “আদম (আঃ) যখন গুণাহ করে ফেললেন, তখন তাকে পৃথিবীতে নামিয়ে দেয়া হল। তিনি তিনশ’ বছর কাঁদতে থাকলেন। তবুও ক্ষমা পেলেন না। শেষে একদিন তিনি বললেন : হে আমার প্রভু ! তোমার নিকট মুহাম্মাদকে (সা:)সত্য জেনে প্রার্থনা করছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আল্লাহ বললেন হে আদম ! তুমি কিভাবে মুহাম্মাদকে(সা:)চিনলে, অথচ আমি তাকে সৃষ্টি করিনি? আদম (আঃ) বললেন : হে আমার প্রভু ! আপনি আমাকে যখন আপনার হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছিলেন এবং আমার মধ্যে আত্মার প্রবেশ ঘটান, তখন আমি আমার মাথা উঁচু করেছিলাম। অতঃপর আমি আরশের গায়ে লিখা দেখেছিলাম (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ)। আমি জেনেছি যে, আপনার কাছে সর্বাপেক্ষা ভালবাসার সৃষ্টি ব্যতীত অন্য কাউকে আপনি আপনার নামের সাথে সম্পৃক্ত করবেন না। তখন আল্লাহ বললেন : সত্যই বলেছ হে আদম ! নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সা:) আমার সর্বাপেক্ষা ভালবাসার সৃষ্টি। তার ওসিলায় তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম।”
ঘটনাটি আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত, কারণ অনেক বই-পুস্তকে এটি দেখতে পাওয়া যায়;এবং আমাদের সমাজে এক শ্রেনীর বক্তারা ওয়াজ,মাহফিলে বক্তব্যও রাখেন এটি কে মুখ্য আলোচ্য বিষয় হিসেবে ।
যা প্রায় সবগুলো মসজিদেই তালিমী বৈঠকেও এটি পড়া হয়ে থাকে।
-
⏩ আসুন আমরা এখন কুরআনের আলোকে ঘটনাটি যাচাই করে দেখিঃ
-
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
-
✔📚[সূরা আল বাকারা,আয়াত: ৩৫]
وَقُلْنَا يَٰٓـَٔادَمُ ٱسْكُنْ أَنتَ وَزَوْجُكَ ٱلْجَنَّةَ وَكُلَا مِنْهَا رَغَدًا حَيْثُ شِئْتُمَا وَلَا تَقْرَبَا هَٰذِهِ ٱلشَّجَرَةَ فَتَكُونَا مِنَ ٱلظَّٰلِمِينَ
অর্থঃ আমি বললাম, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করো এবং যেখানে যা ইচ্ছা তৃপ্তি সহকারে খাও। কিন্তু এ গাছের নিকটে যেয়ো না। গেলে তোমরা সীমালঙ্ঘনকারীদের মধ্যে শামিল হবে’।
-
✔👉🏾কিন্তু শয়তানের প্ররোচণায় আদম (আঃ) আল্লাহ তা'আলার এ নিষেধ মানতে পারলেন না। আদম (আঃ) যখন আল্লাহর নিষেধ অমান্য করলেন তখন মহান আল্লাহ তায়ালা তার কাছে কৈফিয়ত তলব করলেন ;যেমন করেছিলেন ইবলিশ শয়তানের কাছে। কিন্তু ইবলিশ তখন আল্লাহ পাকের নিকট বিভিন্ন কুযুক্তি পেশ করেছিল। আর তাই সে হয়েছিল অভিশপ্ত শয়তান।
-
⏩ কিন্তু আদম (আঃ) এর কাছে যখন আল্লাহ পাক কৈফিয়ত তলব করলেনঃ
-
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
-
✔📒[সূরা আল আরাফ,আয়াত: ২২]
فَدَلَّىٰهُمَا بِغُرُورٍ فَلَمَّا ذَاقَا ٱلشَّجَرَةَ بَدَتْ لَهُمَا سَوْءَٰتُهُمَا وَطَفِقَا يَخْصِفَانِ عَلَيْهِمَا مِن وَرَقِ ٱلْجَنَّةِ وَنَادَىٰهُمَا رَبُّهُمَآ أَلَمْ أَنْهَكُمَا عَن تِلْكُمَا ٱلشَّجَرَةِ وَأَقُل لَّكُمَآ إِنَّ ٱلشَّيْطَٰنَ لَكُمَا عَدُوٌّ مُّبِينٌ
-
অর্থঃ অতঃপর প্রতারণাপূর্বক তাদেরকে সম্মত করে ফেলল। অনন্তর যখন তারা বৃক্ষ আস্বাদন করল, তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের সামনে খুলে গেল এবং তারা নিজের উপর বেহেশতের পাতা জড়াতে লাগল। তাদের প্রতিপালক তাদেরকে ডেকে বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে এ বৃক্ষ থেকে নিষেধ করিনি এবং বলিনি যে, শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
-
✔👉🏾তখন আদম (আঃ) শয়তানের মত কোন কুযুক্তি পেশ করেননি। তিনি আল্লাহ তা'আলার কাছে খুব লজ্জিত হলেন এবং আল্লাহ পাকের কাছে কিভাবে ক্ষমা চাইবেন তাই মনে মনে খুঁজছিলেন। মহান আল্লাহ পাক তার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে তিনি নিজেই আদম (আঃ) কে ক্ষমা চাওয়ার বাক্য শিখিয়ে দিলেন।
-
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
✔📚সূরা আল বাকারা,আয়াত: ৩৭
فَتَلَقَّىٰٓ ءَادَمُ مِن رَّبِّهِۦ كَلِمَٰتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
-
অর্থঃ অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।
-
✔👉🏾তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে আদম (আঃ) এর ক্ষমা চাওয়ার বাক্য আল্লাহ পাক নিজে শিখিয়ে দিয়েছিলেন।
-
কি ছিল সেই বাক্য? সেটা কি উপরের হাদীসে বর্ণিত ঘটনার অনুরুপ?
না তা হতে পারে না , কারণ উপরের হাদীসে আল্লাহ আদম (আঃ) কে প্রশ্ন করছেন তার ক্ষমা চাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে।
মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উসিলায় ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চয় তাহলে আল্লাহ পাকের শিখানো নয়।
তাহলে কি ছিল আল্লাহ পাকের শিখানো সেই বাক্য যার মাধ্যমে আদম (আঃ) ক্ষমা করা হয়েছিল।
-
⏩ আসুন তা জেনে নিই সেই বাক্যটি কি ছিলঃ
-
✔📚সূরা আল আরাফ,আয়াত: ২৩
قَالَا رَبَّنَا ظَلَمْنَآ أَنفُسَنَا وَإِن لَّمْ تَغْفِرْ لَنَا وَتَرْحَمْنَا لَنَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَٰسِرِينَ
-
অর্থঃ তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।
-
তারপর আল্লাহ তা‘আলা উভয়ের তাওবাহ কবূল করে দুনিয়াতে প্রেরণ করলেন।
-
✍🏾সুতরাং এ দার প্রমাণিত হল যে ,আসলে উপরে বর্ণিত[❌📔]হাদীসটি জাল।
-
✔👉🏾আল্লামা নাসির উদ্দীন আলবানী তার যঈফ ও জাল হাদীস সিরিজ গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনার পর বলে , সম্ভবতঃ এটি ইসরাঈলী বর্ণনা থেকে এসেছে।
-
✔✍🏾কেউ কেউ একটি জাল [❌📔] হাদীসের আশ্রয় নিয়ে বলেন যে, আদম (আঃ) আল্লাহ তা‘আলার আরশের ওপর ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’লেখা দেখেন এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওসীলা গ্রহণ করে দু‘আ করেন; ফলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের কে ক্ষমা করে দেন। এটা ভিত্তিহীন বর্ণনা এবং কুরআনের বর্ণনার পরিপন্থী। এ ছাড়া এটা আল্লাহ তা‘আলার বর্ণিত তরীকারও বিপরীত। প্রত্যেক নাবী সব সময় সরাসরি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করেছেন। অন্য কোন নাবী ও অলীর ওসীলা বা মাধ্যম ধরেননি।
-
🌹✍🏾আল্লাহ তা'আলা সমস্ত মুসলিম ভাই ও বোনদের সঠিক দ্বীনি ইসলামকে বুঝবার ও মেনে চলার তৌফিক দান করুন "আমিন"।
collected from FB