Рет қаралды 165
আমি শপথ করছি এই নগরের। যখন (হে নবী!) তুমি এই নগরের বাসিন্দা। এবং আমি শপথ করছি পিতার ও তার সন্তানের। আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি পরিশ্রমের ভেতর। সে কি মনে করে তার উপর কারও ক্ষমতা চলবে না? সে বলে, আমি অঢেল অর্থ-সম্পদ উড়িয়েছি। সে কি মনে করে তাকে কেউ দেখছে না? আমি কি তাকে দেইনি দু’টি চোখ? এবং একটি জিহ্বা ও দু’টি ঠোঁট? আমি তাকে দু’টো পথই দেখিয়েছি। তবুও সে প্রবেশ করতে পারেনি ঘাঁটিতে।
তুমি কি জান সে ঘাঁটি কী? (তা হচ্ছে কারও) গর্দানকে (দাসত্ব থেকে) মুক্ত করা। অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে খাদ্য দান করা। কোন ইয়াতীম আত্মীয়কে। অথবা এমন কোন মিসকীনকে যে ধুলো মাটিতে গড়াগড়ি খায়। আর অন্তর্ভুক্ত হওয়া সেই সব লোকের, যারা ঈমান এনেছে, একে অন্যকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দিয়েছে এবং একে অন্যকে দয়ার উপদেশ দিয়েছে। তারাই সৌভাগ্যবান লোক। অপর দিকে যারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে, তারাই হতভাগ্য। তাদের উপর চাপানো থাকবে আবদ্ধকৃত আগুন।
সূরা বালাদে যে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে
এই সূরার শুরুতে আল্লাহ তায়ালা একটি নগরীর শপথ করেছেন। সেই নগরীটি হলো মক্কা নগরী। সূরাটি অবতীর্ণ হওয়ার সময় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কাতেই অবস্থান করছিলেন। তার জন্মস্থানও ছিল মক্কা শহর। অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা নবী নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মস্থান এবং বাসস্থানের কসম খেয়েছেন। যার কারণে তার অতিরিক্ত মর্যাদার কথা সুস্পষ্ট।
এরপরের আয়াতে সেই সময়কার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে যখন মক্কা বিজয় হয়েছিল।
এরপর বনী আদম বা মানব জাতির শপথ করা হয়েছে। এখানে আদম আলাইহিস সালাম থেকে তার ঔরসে জন্ম গ্রহণকারী ও দুনিয়ার সমস্ত মানুষ অন্তর্ভুক্ত। যারা বর্তমানে পৃথিবীতে আছেন, যারা অতীতে অতিবাহিত হয়েছেন এবং যারা ভবিষ্যতে আসবেন সবাই অন্তর্ভুক্ত। এভাবে এতে আদম ও দুনিয়ার আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত সব বনী-আদমের শপথ করা হয়েছে।
এরপর বলা হয়েছে, মানুষের জীবন পরিশ্রম ও দুঃখ-কষ্টে পরিপূর্ণ।
এরপর মানুষের কিছু বদ অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে। আর তাহলো দান করে বলে বেড়ানো। মানুষ দুনিয়ার ব্যাপারে এবং ফালতু কাজে অনেক পয়সা ব্যয় করে এরপর গর্বের সাথে লোকের কাছে তা বলে বেড়ায়। (অথবা সে দ্বীনের ব্যাপারে অর্থ ব্যয় করে, অতঃপর আক্ষেপের সাথে লোকের কাছে তা বলে বেড়ায়।
এমনিভাবেই আল্লাহর নাফরমানীতে অটল থেকে সম্পদ খরচ করে আর ভাবে যে, তার পরিদর্শনকারী কেউ নেই। অথচ আল্লাহ সবই দেখছেন এবং সে ব্যাপারে তাকে তিনি সাজা দেবেন।
পরবর্তী আয়াতগুলোতে আল্লাহ তায়ালা কিছু নিয়ামতের কথা উল্লেখ করেছেন; যাতে এমন মানুষেরা উপদেশ গ্রহণ করে।
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দুটি চোখ দিয়েছেন, জিহ্বা ও ঠোট দিয়েছেন। জিহ্বা দিয়ে সে কথা বলে এবং নিজের মনের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে। আর ওষ্ঠাধর (দুই ঠোঁট) দিয়ে সে বলা এবং খাওয়ার কাজে সহযোগিতা নিয়ে থাকে। এ ছাড়া এগুলো তার চেহারা ও মুখমন্ডলের সৌন্দর্যের বিশেষ কারণও বটে।