Рет қаралды 308
প্রথমেই বলে রাখি আমাদের এই ট্রেকটার অন্যতম চেষ্টা ছিল যতটা কম খরচে একটা চিত্তাকর্ষক বেড়ানোর আয়োজন করা যায়। এখানে যে হিসেব আপনাদের দেব তা হয়ত আপনাদের পছন্দ নাও হ’তে পারে। আমাদের যাত্রা শুরু ২০ এপ্রিল। হাওড়া থেকে সন্ধে ছ’টার ট্রেন। কামরূপ এক্সপ্রেস। পরদিন সকাল সাড়ে পাঁচটায় নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছে ধোতরে পর্যন্ত টাটা-সুমোতে চেপে যাওয়ার কথা। গাড়ি আগে থেকেই বুক করে রেখেছিলাম। আপনারাও কথা বলে নিতে পারেন। ড্রাইভারের নাম বিনোদ। ফোন নম্বর- 9733076001
ধোতরে পৌঁছে সেদিনই আমরা টোংলুর উদ্দেশে হাঁটা শুরু করেছিলাম। সেরকমই প্ল্যান ছিল। এখান থেকে একজন গাইডের সঙ্গে কথা বলেও রেখেছিলাম। তিনি যেতে পারেননি। আরেকজনকে দিয়েছিলেন। ভাগ্যিস দিয়েছিলেন। অমন ভালো গাইড পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের। ভারী মজার মানুষ। আপনারা গেলে ওঁর সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন। বলরাম রাই। মোবাইল- 9733281453
টোংলু পৌঁছে আমাদের রাতের আস্তানা GTA Trekker’s Hut. কলকাতার গোর্খা ভবন থেকে বুক করেছিলাম। সল্টলেক সিটি সেণ্টারের কাছেই। সে এক হ্যাপার কাজ। আমাদের তিনদিন যেতে হয়েছিল। আপনাদের যাতে একদিনেই সব হয়ে যায় তাই বলে দিই। গোর্খা ভবন প্রতিদিন খোলা থাকলেও সোম, বুধ, শুক্র, এই তিনদিনই কেবলমাত্র ট্রেকার’জ হাট বুকিং-এর কাজ হয়। শুভঙ্কর পাল নামের একজন বুকিং নেন। তিনি আপনাকে অবলীলায় তার ফোননম্বর দিয়ে দেবেন কিন্তু ফোন তুলবেন না। যাক নম্বরটা আমিও দিয়ে রাখি। 9903174047
ট্রেকার’জ হাট বুক করতে গেলে সকাল ন’টায় গিয়ে নাম লেখান। তারপর অপেক্ষা করুন। তারপর আরও অপেক্ষা করুন। এবং আরও। সরকারি ট্রেকার’জ হাট, জনপ্রতি ২০০ টাকায় পাওয়া যায়। আমরা প্রথমদিন টোংলু, দ্বিতীয়দিন কালিপোখরি, তৃতীয়দিন সান্দাকফু এবং চতুর্থদিন শ্রীখোলায় ছিলাম। যেহেতু কালিপোখরি নেপালে তাই জিটিএ’র ট্রেকার’জ হাট নেই। আমরা এখান থেকে বুক করে গেছিলাম। কালিপোখরিতে থাকার খরচ তিনশ টাকা জনপ্রতি। যোগাযোগ করুন তেনজিং ছোডেন এর সঙ্গে। মোবাইল- 9635224131 তবে এখান থেকে বুক না করে গেলেও ওখানে পেয়ে যাবেন। বেশকিছু হোটেল, হোমস্টে, ট্রেকার’জ হাট রয়েছে। আমরা প্রথমদিন টোংলুতে ছিলাম। তবে আপনারা চাইলে টুমলিং-এও থাকতে পারেন, কিন্তু ওখানে জিটিএর ট্রেকার’জ হাট পাবেন না। টুমলিং নেপালে।
যা বোঝা গেল যে থাকার খরচ সান্দাকফু ট্রেকে বেশ কমই। তবে খাওয়ার খরচ বেশ ভালোই। দুপুরের আর রাতের খাবার ২০০ থেকে ২৩০ টাকার মধ্যে। ডিমের মামলেট, ডাল, ভাত, ভাজা, তরকারি আর পাঁপড়। চা ১০ থেকে ৩০ টাকা। সান্দাকফুর ওই বিচ্ছিরি চা তিরিশ টাকা, তুলনায় শ্রীখোলার দশটাকার চা অনেক ভালো ছিল। তাই পারলে ব্যাগ ভরে শুকনো খাবার নিয়ে যান। যদিও সেগুলো বইতে আপনাকেই হবে।
শ্রীখোলা থেকে নিউজলপাইগুড়ি যে গাড়িটায় এসেছিলাম তাতে সাড়ে পাঁচহাজার লেগেছিল। শ্রীখোলার ট্রেকার’জ হাটের কেয়ারটেকারই গাড়িটা জোগাড় করে দিয়েছিলেন। ও ভালো কথা, শ্রীখোলার ট্রেকার’জ হাটটা নাকি হণ্টেড, মানে লোকমুখে প্রচার পেয়ে ওটা এখন ভূতের বাড়ি। ও’সব আসলে কিছুই না। সরকারি সম্পত্তি, অবহেলায় নষ্ট হয়ে গেছে। জানলা টানলা ভাঙা, সার্ভিস বলে কিস্যু নেই। খেতে গেলেও দূরে যেতে হয়। অমন নদীর পাড়ে বাড়ি, তায় জানলা টানলা ভাঙা। সারারাত ধরে ওই নদীর শব্দ শোনার রোম্যাণ্টিসিজম সকলের নেই। তাই তারা ভূত দেখে ফেলে হয়ত।