সুগন্ধি মরিচ চাষে সুনীলের বাজিমাত বছরে আয় ৮ লাখ টাকা।

  Рет қаралды 1,102

Radio Swapno

Radio Swapno

Күн бұрын

দুনিয়াতে সম্ভবত মরিচই এক মাত্র ফল যা কামড়ালে পাল্টা কামড় দেয়। এই পাল্টা কামড়ের প্রতিক্রিয়া মরিচের জাতভেদে নানা ধরনের হতে পারে। কোনটা কামড় দেয়ার সাথে সাথে মুখের ভিতর জ্বালা শুরু হয়, কোনটা গলাধঃকরণ না করা পর্যন্ত টের পাওয়া যায়না, কোনটা জিহ্বার আগায় জ্বালা ধরিয়ে দেয়, কোনটা আবার সমস্ত মুখগহবরে আগুন...লঙ্কা মুখে দেয়ার পর আমাদের যে ঝালের অনুভূতি হয়, তার কারণ ওই প্ল্যাসেন্টার গ্রন্থিগুলোর ভেতরে থাকা ‘ক্যাপসাইসিন’ নামের রাসায়নিক উপাদান। একটি কাঁচা লঙ্কা মুখে দেওয়ার পরে ক্যাপসাইসিন নামক ওই রাসায়নিক পদার্থ আমাদের মুখের লালার সঙ্গে মিশে যায় এরপর মুখ এবং জিহ্বায় থাকা ‘টিআরপিভি১’ রিসিপটরের সঙ্গে একত্রিত হয়। টিআরপিভি১ রিসিপটরই মূলত আমাদের জিহ্বার মধ্যে তীব্র দহনের বিষয়টি জানান দেয় এবং মস্তিস্ককে সঙ্কেত পাঠায় এবং মস্তিষ্ক আমাদের বোঝায় যে আমাদের মুখে আগুন জ্বলছে। আর তখনি শুরু হয় লঙ্কা কান্ড!ঝাল খেতে যারা ভীষণ পছন্দ করেন তাদের জন্য বোম্বাই মরিচ বা নাগা মরিচ হলো অন্যতম পছন্দের একটি খাদ্য উপাদান।
রসনাবিলাসীদের খাদ্যতালিকায় মরিচ যেন অপরিহার্য অংশ! আর সেই মরিচ যদি সুগন্ধ ছড়ায়, তবে তা হয়ে ওঠে আরও লোভনীয়। বরগুনার হেউলিবুনিয়া গ্রামের সুনীল নামের এক কৃষক এমনই সুগন্ধি জাতের মরিচ চাষ করেছেন। ফলে তিনি বরগুনায় পরিচিতি পেয়েছেন ‘মরিচ সুনীল’ নামে। সুনীলের চাষ করা এ মরিচের জাতকে ‘ঘৃতকুমারি মরিচ’ বা ‘বোম্বাই মরিচ’ হিসেবেই জানে স্থানীয়রা। এ মরিচের যেমন সুগন্ধ; তেমনই চাহিদাও আছে এলাকা ও এলাকার বাইরে।
জানা যায়, ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাস করে উচ্চশিক্ষা বা চাকরির পেছনে না ছুটে কৃষিকাজেই মনোনিবেশ করেন সুনীল। প্রায় এক দশক আগে পতিত জমিতে সীমিত পরিসরে সুগন্ধি মরিচ চাষ শুরু করেন। সাফল্য পেয়ে ধীরে ধীরে বাড়ান চাষের পরিধি। বর্তমানে ১ একর জমিতে ৫ হাজার মরিচ গাছ নিয়ে সুগন্ধি মরিচের বাগান। প্রতিদিন নিপুণ হাতে গাছের পরিচর্যা করেন। সেই পরিশ্রমের ফলস্বরূপ প্রতি বছর আয় হয় ৮ লাখ টাকা। মরিচ বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে তিন শ্রমিকের।
মরিচ কিনতে আসা মো. রেজাউল বলেন, ‘আসলে এ বোম্বাই মরিচের প্রেমে পড়ে গেছি। প্রতি বছর তার বাগান থেকে এক-দেড় হাজার টাকার মরিচ কিনে খাই। আমার আত্মীয়-স্বজনদেরও এ মরিচ ও চারা কিনে উপহার দিই। যে একবার নিয়েছে; সেই আমার কাছে এ মরিচ চায়। বরগুনার বাজারের সব জায়গায়ই তার মরিচ চলে। চটপটি, শিঙাড়া, চপ, পেঁয়াজুসহ সব খাবারে এ মরিচ ব্যবহার হয়।’
মরিচ বাগানের শ্রমিক মো. হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ দশ বছর ধরে এ বাগানে কাজ করি। আমার পরিবার এ বাগানের ওপরই নির্ভরশীল। মরিচ চাষ করে আল্লাহর রহমতে এ বাগানের মহাজন ভালোই লাভবান হন। আবার অনেক সময় বন্যা-বাদলে সমস্যা হয়। তারপরও মরিচ চাষ লাভজনক। যদি কেউ আমাদের মতো মরিচ চাষে আগ্রহী হন, তবে করতে পারে। এটি এনেক লাভজনক ফসল।’
বাগান মালিক সুনীল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘আমি ১৯৮৬ সালে এসএসসি পাস করার পর কৃষিকাজ নিয়েই পড়ে থাকতাম। নিজে করতাম আবার শ্রমিক দিয়েও করাতাম। এ দিয়েই মোটামুটি সফল হয়েছি। সামনের দিনেও কৃষিকাজ করতে চাই। এর মাধ্যমে আমার শহরে বাড়ি হয়েছে। আমার ছেলে ইংরেজিতে অনার্স পড়ে। মেয়েকে ভালো পরিবারে বিয়ে দিয়েছি।’
মরিচ চাষ করেন যেভাবে
সুনীল তাঁর নিজের বাগানে নিজের নার্সারিতে করা মরিচের চারাই রোপণ করেন। বাড়তি চারা বিক্রি করে দেন। শ্রাবণের শেষ দিকে খেতে চারা রোপণ এরপর শুরু হয় পরিচর্যা। সার প্রয়োগ, আগাছা নিড়ানি, পোকা দমনে কীটনাশক প্রয়োগ, কত কী! গাছের গোড়ার মাটি যাতে জমাট বেঁধে না যায়, সে জন্য মাঝেমধ্যে তা খুঁচিয়ে ঝুরঝুরে করে দিতে হয়। তবে বর্ষায় সেচ লাগে না। বর্ষার মধ্যেই গাছগুলো ঘন-গাঢ় ডালপালা-পাতায় সবুজ হয়ে ওঠে, ফুল ধরে শাখায় শাখায়। আশ্বিনে শুরু হয় মরিচের ফলন। শাখাগুলো ভরে ওঠে সবুজ মরিচে মরিচে। এরপর প্রতিদিনই মরিচ তোলেন, বিক্রি করেন। বরগুনা থেকে পাইকার এসে খেত থেকেই প্রতিদিন মরিচ নিয়ে যান। মরিচ তোলেন, আবার ফুল আসে। এভাবে মরিচের ফলন চলতে থাকে বৈশাখের শেষ অবধি।
সুনীলের খেতে পাঁচ হাজার চারা আছে। এর থেকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেন। গত মৌসুমে তিন লাখের ওপরে মরিচ ধরেছে। ছোট, মাঝারি, বড়-তিন ধরনের মরিচ বিক্রি করেন শতক হিসেবে। প্রতি শতক মরিচ পাইকারি বিক্রি হয় ১০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। গত মৌসুমে সব ব্যয় মিটিয়ে সুনীল ছয় লাখ টাকা মরিচ বিক্রি করে লাভ করেছেন। এবার ফলন আরও ভালো হওয়ায় লাভের পরিমাণ আট লাখ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে তাঁর আশা।
সুনীল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘পরিবারকে আমি পরিশ্রম, বুদ্ধি আর নিজের কৌশলে টেনে এখানে এনেছি। পরিবার নিয়ে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে আছি, সুখে আছি।’ কৃষিকাজকে একসময় সমাজে খাটো করে দেখা হতো উল্লেখ করে সুনীল বলেন, ‘কিন্তু আমি মনে করি, কৃষিই আমাদের মৌলিক পেশা। এতে নিজে বাঁচা যায়, অন্যকেও বাঁচানো যায়। দেশের জন্য নিঃস্বার্থ অবদান রাখলে কৃষকেরাই রাখেন।’
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) এস এম বদরুল আলম বলেন, জলবায়ুর সংকটে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে কৃষিক্ষেত্র মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়েছে। অসহনীয় লবণাক্ততা মাটি ও পানিকে ক্রমেই ব্যবহার অনুপযোগী করে তুলছে। এখন চাষাবাদ পদ্ধতির পরিবর্তন, ফসলের বহুমুখীকরণের বিকল্প নেই। উপকূলে কৃষক সুনীলের ব্যক্তিগত বুদ্ধিমত্তায় যে কৌশল অবলম্বন করে সফলতা পেয়েছেন, সেটা সারা দেশের জন্য অনুসরণীয় এক গল্প হতে পারে।

Пікірлер: 1
Nepal's Mad Honey That Causes Hallucinations (They climb to go insane)
19:55
Орех макадамия | Как это устроено? | Discovery
9:14
Discovery Channel Россия
Рет қаралды 10 МЛН
Who is More Stupid? #tiktok #sigmagirl #funny
0:27
CRAZY GREAPA
Рет қаралды 10 МЛН
The Lost World: Living Room Edition
0:46
Daniel LaBelle
Рет қаралды 27 МЛН
Живет в теплице и выращивает огурцы
17:29
Onliner Belarus
Рет қаралды 167 М.
Who is More Stupid? #tiktok #sigmagirl #funny
0:27
CRAZY GREAPA
Рет қаралды 10 МЛН