Рет қаралды 56,754
খয়ের পানের অন্যতম প্রধান মশলা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পানকে সুস্বাদু করতে খয়ের অন্যতম উপাদান। আর পান খেয়ে মুখ লাল করতে পানে চুন ও খয়ের এর ব্যবহার হয়ে আসছে সেই প্রাচীনকাল থেকে।
খয়ের গাছ মাঝারি আকারে পর্ণমোচী। উচ্চতা ১৫ থেকে ১৮ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলগুলো সিমের মত চ্যাপ্টা, সাদাটে। চৈত্র মাসের দিকে গাছের ফুল আসে, আর পৌষ মাসে গাছে ফল পাকে।
তবে খয়ের উৎপন্ন হয় এই গাছের কাঠ থেকে। বাংলা এটিকে খয়ের বলা হলেও আরবি ফার্সি উর্দু কিংবা হিন্দিতে একে বলা হয় ক্বাথ।
খয়ের তৈরি করার কাজ অত্যন্ত পরিশ্রমের। প্রথমে পরিপক্ক গাছ কেটে ছোট ছোট টুকরো করে নিতে হয়। এরপর সেই ছোট কাঠের টুকরো গুলি কুচি কুচি করে কাটা হয়। পরে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখাতে হয়।
বড় বড় মাটির হাঁড়িতে ভরে সিদ্ধ করা হয়। একটি চুলায় ১০ থেকে ১২টি হাঁড়ি বসানো যায়। অনেকক্ষণ সিদ্ধ করার পর কাঠের নির্যাস গরম পানিতে মিশতে থাকে। হাঁড়ির তলায় জমতে থাকে খয়েরের স্তর। সেই খয়েরের রস ভালো করে ছেঁকে আলাদা একটা পাত্রে কয়েক ঘন্টা ধরে আবারও জ্বালাতে হয়। আগুনের তাপে বেরিয়ে আসে খয়ের।
রাজশাহী অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে খয়ের গাছ জন্মায়। এই অঞ্চলে বহু মানুষ আছেন যাদের জীবিকা শুধুমাত্র খয়ের গাছকে কেন্দ্র করে। তবে রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী খয়ের শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় এই পেশায় যুক্ত ছিলেন প্রায় দুই লক্ষ মানুষ। পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী খয়ের গাছ লাগানোর জন্য সরকারিভাবে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অপরদিকে গাছ পর্যায়ক্রমে কেটে ফেলায় ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে খয়ের বাগান। ১৯৫২ সালে রাজশাহীর চারঘাটের গোপালপুর গ্রামে যে খয়ের শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল তার ভবিষ্যৎ আজ অন্ধকারে।
এছাড়াও ভারত, চীন, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, মায়ানমার প্রভৃতি দেশে এই গাছের দেখা পাওয়া যায়।