Рет қаралды 140
তাহার নামটি রঞ্জনা
কাহিনি বিন্যাস : এক কৃষ্ণপক্ষের রাতে বহরমপুর জেলের ভেতরে অফিসের এক দৃশ্য দিয়ে এ নাটকের শুরু। বাইরে নিবিড় অন্ধকার, সঙ্গে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। অফিসের জেলর কৌশিকের প্রতি সমব্যথী, সহানুভূতিশীল। কৌশিকের জন্য তার হৃদয়ে দুর্বলতাও আছে। কৌশিকের প্রকৃত পরিচয় জানবার জন্যে সে উৎসুক, আগ্রহী। কৌশিক কেন যে খুন করল সে কারণও তার কাছে পরিষ্কার নয়, পণ্ডিতমশায়ও কৌশিককে ভালোবাসে। কৌশিককে দেখে খুনী বলে একদিনও মনে হয়নি তার। বিরাজমোহন ও পণ্ডিতমশাইয়ের কথোপকথন শুনে আমরা বুঝতে পারি কৌশিক ছয় সাত মাস ধরে জেলখানায় আছে।
কোর্টে কৌশিক তার প্রকৃত পরিচয় ও খুনের কারণ গোপন করে। তবে ফাঁসির দিন রাত্রে বিরাজমোহন ও পণ্ডিতমশাইকে সেই না জানা কাহিনি সে বলে যায়। কৌশিক গুপ্ত একটি মেয়েকে ভালোবাসত। সাতদিনের জন্যে সে একবার পাটনায় চলে গেলে বন্ধু কিষণচাদের কাছে তাকে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যায়। পাটনা থেকে ফিরে এসে কৌশিক দেখে কিষণচাঁদ তার ভালোবাসার মানুষকে ‘অজ্ঞান করে তার সর্বনাশ করে,তারপর বিয়ে করেছে।' বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিশোধ নিতে কৌশিক তাকে খুন করে।
সেই প্রকৃত সত্য কৌশিক যেমন কোর্টকে জানায় না, তেমনি জানায় না সুদূর শিলিগুড়ি থেকে ছুটে আসা তার বোন রঞ্জনাকে। কৌশিক বোনকে চিনতে পারে, কিন্তু সেই যে তার প্রকৃত দাদা অম্বুজাক্ষ মজুমদার সে কথা বোনকে জানায় না। অম্বুজাক্ষের মৃত্যু সম্পর্কে বানিয়ে গল্প বলে রঞ্জনাকে। কুম্ভমেলায় এক মহিলার সন্তানকে জলে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে অম্বুজাক্ষ নিজেই মৃত্যুবরণ করেছে এমন একটি কাহিনির মধ্য দিয়ে বোনকে সে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করে। যে মানসিক যন্ত্রণায় কৌশিক বা অম্বুজাক্ষ কাতর তার সঞ্চার সে মা ও বোনের মধ্যে ঘটাতে চায়নি।
এক প্রকাশকের দেওয়া দুহাজার টাকা সে তুলে দেয় বোন রঞ্জনার হাতে। ফাঁসির দড়িতে মৃত্যুবরণ করতে যাবার মুহূর্তে রবি ঠাকুরের ‘এক গাঁয়ে’ আবৃত্তি করতে থাকে কৌশিক।