Рет қаралды 15,323
জীবদেহে পরমাত্মার উপলব্ধি - Experiencing God in Human Body আমাদের মধ্যে যে কর্তাভাব, আমাদের মধ্যে যে কর্ম্মের প্রবৃত্তি, আমাদের মধ্যে যে শোকের (করণের) অনুভূতি, আমাদের মধ্যে যে দেশ ও কালের অনুভূতি, আমাদের মধ্যে যে সুখ-দুঃখের অনুভূতি, আমাদের যে প্রবৃত্তি আমাদের যে অনুরাগ, এই সবকিছু যে কারণে হয়ে থাকে তাকেই বলে স্বভাব। সমষ্টিগতভাবে এই স্বভাবকে বলে পরমাত্মা, আর ব্যষ্টিগত ভাবে, বলে জীবাত্মা। আসলে এই স্বভাবই সমস্ত কাজ করছে। অর্থাৎ স্বভাব বা তিনিই কারন, আর স্বভাবজাত যা কিছু তা হচ্ছে কার্য্য।
পাপ-পুন্য যেমন পরস্পর বিরুদ্ধ কিন্তু একই মানুষ্য শরীরে বাস করে থাকে, ঠিক তেমনি জ্ঞান জড়বস্তু না হয়েও জড়দেহে নিবদ্ধ হয়ে আছে। প্রদীপ যেমন প্রজ্বলিত হয়ে, অন্যের বিষয়বোধ করিয়ে দেয়, ঠিক তেমনি জ্ঞান জীবআত্মাকে বা মানুষের ইন্দ্রিয়গনের বিষয়বোধ সম্পাদন করছে। মন্ত্রী-পরিষদ যেমন রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়, রাজার গোচরে আনেন, তেমনি আমাদের ইন্দ্রিয়গণ বাহ্য-জগতের সমস্ত বিষয়-বোধ সম্পাদন করছে। মন্ত্রীদের থেকে রাজা যেমন শ্রেষ্ঠ, তেমনি শরীরের ইন্দ্রিয়গণ থেকে জীবাত্মা শ্রেষ্ঠ। অগ্নির শিখা, বাতাসের বেগ, সূর্য্যের রশ্মি, নদীর জল, যেমন বারবার গমনাগমন করছে, ঠিক তেমনি, আমাদের এই দেহ, একবার নষ্ট আবার একবার উদ্ভূত হচ্ছে। যতক্ষন ইন্ধন থাকে ততক্ষন অগ্নিশিখা দৃষ্টিগোচর থাকে। ইন্ধন শেষ হয়ে গেলে, অগ্নিশিখা দৃষ্টিগোচর থাকে না। তাই বলে কি অগ্নি নেই, তা নয়। কাঠের মধ্যে আগুন, ধোঁয়া আছে। কিন্তু কাঠকে কুড়ুলের দ্বারা টুকরো করেও, আগুনের বা ধোঁয়ার দেখা মিলবে না। ঠিক তেমনি, মানুষের শরীরকে টুকরো টুকরো করে ফেললেও, আত্মা বা জীবাত্মার সন্ধান মিলবে না। কিন্তু এই কাঠকে যদি আমরা সঠিক উপায়ে ঘর্ষন করতে পারি, তবে এই কাঠের মধ্যেই ধোয়া ও অগ্নি দেখতে পাবো। ঠিক তেমনি, আমরা যদি বুদ্ধিকে যদি শান দিতে পারি, অর্থাৎ সঠিক জ্ঞান অর্জনের সাহায্যে আমরা জীবাত্মা ও পরমাত্মাকে দর্শন করতে পারি। মানুষ যেমন স্বপ্নে, নিজের পার্থিব দেহকে বিছানায় রেখে, পৃথকভাবে চৈতন্য প্রভাবে ভূমন্ডল ঘুরে বেড়াতে পারে, আবার জাগ্রত অবস্থায়, পার্থিব দেহকে অভিন্নভাবে দর্শন করে, ঠিক তেমনি, মন ও বুদ্ধি সম্পন্ন দশ ইন্দ্রিয় (জ্ঞান -ইন্দ্রিয় ৫টি, চক্ষু, কর্ন, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক। কর্ম্ম ইন্দ্রিয় -৫টি বাক, পাণি, পাদ, পায়ু, উপস্থ ) এছাড়া অন্তর-ইন্দ্রিয় ৪টি - মন, বুদ্ধি, অহংকার ও চিত্ত ও বায়ুযুক্ত জীবাত্মা (দশ বায়ু, প্রাণ, অপান, ব্যান, উদান, সমান এবং নাগ, কূর্ম্ম, কৃকর, দেবদত্ত ও ধনঞ্জয়) জীবনান্তে দেহকে একবার আপনা হতে পৃথকভাবে দর্শন করেও পুনরায় এঁকে অভিন্ন বিবেচনা পূর্বক দেহান্তরে গমন করে থাকে। তথ্যসূত্রঃ মহাভারত, শান্তিপর্ব্ব SASANKA SEKHAR PEACE FOUNDATION - ETERNAL PEACE SEEKER